প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, স্বাধীন ও শক্তিশালী বিচার বিভাগের জন্য মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে। বিচার বিভাগের জন্য সুপ্রিম কোর্টে পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তিনি বলেন, বিচারকদের প্রকৃত স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে না যতদিন বিচার বিভাগ নিয়ে দ্বৈতশাসন বিলোপ না হয়। অধঃস্তন আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি ও বদলিতে আইন মন্ত্রণালয়ের কর্তৃত্ব বিলোপ করতে হবে। বিচার বিভাগের জন্য করতে হবে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে পৃথক সচিবালয়।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে অধঃস্তন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশ্যে অভিভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য শিগগিরই মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে।
তিনি বলেন, শাসনের আইন নয়, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করাই বিচার বিভাগের মূল দায়িত্ব। বিচারকদের বদলি, পদায়ন ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নীতিমালা করা হবে। বিগত বছরগুলোতে বিচার বিভাগের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, শঠতা, নিপীড়ন ও বঞ্চনার হাতিয়ার হিসাবে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করা হয়েছে।
বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্টসহ সারাদেশের আদালতে দুর্নীতিকে কোনো প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। কোনো জেলা জজ যদি তার অধীনের আদালতে দুর্নীতি নির্মূলে ব্যর্থ হন সেটা তার অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।
এসময় বিচার বিচাগের জন্য স্বতন্ত্র বাজেট দেওয়ার কথাও তুলে ধরেন প্রধান বিচারপতি রেফাত আহমেদ।
সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, বিগত বছরগুলোতে বিচার বিভাগের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। হস্তক্ষেপের কারণে বিচারের ওপর মানুষের আস্থা কমেছে।
বিচার বিভাগ যেন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে সে জন্য মাসদার হোসেন মামলা রায় পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন আবশ্যক।
এর আগে অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।
এসময় সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সারা দেশের অধস্তন আদালতের প্রায় দুই হাজার বিচারক, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিটির প্রধান বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।