যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি বোয়িংয়ের প্রায় ৩০ হাজার কর্মী আজ থেকে ধর্মঘটে যাচ্ছেন।
২৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কোম্পানির সঙ্গে ইউনিয়ন প্রতিনিধির হওয়া প্রাথমিক চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে শুক্রবার থেকে ধর্মঘটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
বিবিসি লিখেছে, সিয়াটল ও পোর্টল্যান্ড এলাকায় ৭৩৭ ম্যাক্স ও ৭৭৭ মডেলের উড়োজাহাজ নির্মাণের সঙ্গে জড়িতরা কাজ বন্ধ রাখবেন। দুটি মারাত্মক দুর্ঘটনাসহ সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া কোম্পানিটির ইমেজের জন্য এই ধর্মঘট আরেকটি বড় ধাক্কা।
বোয়িংয়ের নতুন প্রধান নির্বাহী কেলি অর্টবার্গের জন্যও এটি বড় ধাক্কা, যিনি গত মাসেই এই দায়িত্ব পান ব্যবসা ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে।
প্রাথমিক চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে ভোট দিয়েছেন ইউনিয়নের প্রায় ৯৫ শতাংশ সদস্য, আর ধর্মঘটের পক্ষে রায় দিয়েছেন ৯৬ শতাংশ।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব মেশিনিস্ট অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ওয়ার্কার্স ডিস্ট্রিক্ট ৭৫১-এর প্রেসিডেন্ট জন হোল্ডেন বলেন, ‘আজ রাতে আমাদের সদস্যরা উচ্চস্বরে এবং স্পষ্টভাবে কথা বলেছেন। আমরা মধ্যরাতে ধর্মঘট করি।’
বিবিসি লিখেছে, চলতি সপ্তাহের শুরুতে অস্থায়ী চুক্তিতে সমর্থন দিতে সদস্যদের পরামর্শ দিয়েছিলেন ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা।
কর্মীদের সামাল দিতে কোম্পানির প্রধান নির্বাহী অর্টবার্গ শেষবারের মতো অনুরোধ করেন এবং সতর্ক করে দেন যে ধর্মঘট কোম্পানির ‘পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।’
এভিয়েশন নিউজ ওয়েবসাইট ফ্লাইটগ্লোবালের এশিয়া ব্যবস্থাপনা সম্পাদক গ্রেগ ওয়ালড্রন বলেন, ‘ধর্মঘটের জন্য এটা কখনোই ভালো সময় নয়, অন্তত ব্যবস্থাপনার দৃষ্টিকোণ থেকে, বর্তমান পরিস্থিতি সংকটকে আরও গভীর করবে।’
তিনি বলেন, ‘তারপরও ধর্মঘট কতদিন স্থায়ী হবে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। ৭৩৭ ম্যাক্স অর্ডার করা এয়ারলাইন সিইওরা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন।’
বিবিসি লিখেছে, শ্রমিকরা যে প্রাথমিক চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছে, তাতে চার বছরে ২৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি সিয়াটলে পরবর্তী বাণিজ্যিক বিমান নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তবে শর্ত ছিল, ওই প্রকল্পকে চুক্তির মেয়াদের মধ্যে শুরু হতে হবে।
ইউনিয়নের তরফে শুরুতে ৪০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধিসহ শ্রমিকদের প্যাকেজগুলোর উন্নতির লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল।
২০০৮ সালে আট সপ্তাহের ধর্মঘটের পরে বোয়িং ও ইউনিয়ন যে চুক্তিতে পৌঁছেছিল সেটিই বর্তমানে বহাল আছে। ২০১৪ সালে উভয় পক্ষ চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হয়, যার মেয়াদ বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে।