বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় এক কিশোরসহ দুইজনকে হত্যার পৃথক মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকেও আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় জিএম কাদেরের স্ত্রী শেরীফা কাদেরও আসামি।
আন্দোলনে মাহমুদুল হাসান জয় নামে ১৪ বছরের এক কিশোর নিহতের ঘটনায় মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালতে একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় শেখ হাসিনা, জিএম কাদেরসহ ৩৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নিহত কিশোরের পূর্বপরিচিত দাবিকারী রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার সাত মসজিদ হাউজিংয়ের বাসিন্দা মো. রবিউল আউয়াল এই মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি যাত্রাবাড়ী থানাকে এজাহার হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ, পুলিশের সাবেক যুগ্ম-কমিশনার বিপ্লব কুমার, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মো. হাসান মাহমুদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, হামিম গ্রুপের স্বত্বাধিকারী ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে আজাদ, সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী এনামুল হক শামীম, জিএম কাদের স্ত্রী শেরিফা কাদের, সুজন হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা আতিকুল রহমান ভুঁইয়া, যুবলীগ নেতা মনির হোসেন, তারেক খালদুন বিন আরিফ, তাজরিন হোসেন, ইঞ্জি. রবিউল আলম, হাবিবুর রহমান ভুঁইয়া ওরফে হাবু, রফিকুল ইসলাম শান্ত, সাইদুর রহমান বাবুল, আবু বকর, মমিন, শাহজালাল, আবুল কালাম আজাদ, আকবর হোসেন, চিত্তরঞ্জন দাস, নজরুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম রফিক ও মো. আফজাল হোসেন।
মামলায় বলা হয়েছে, গত ১৮ জুলাই দুপুরের পর বাদীর ভাই মো. ওয়াসিম শেখ বাসা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য বের হন। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ওয়াসিম শেখ যাত্রাবাড়ী থানাধীন কাজলা টোল প্লাজা সংলগ্ন পাকা রাস্তার ওপর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেন। ওই সময় এলোপাতাড়ি গুলিতে অনেকেই মারাত্মক জখম হন। বাদীর ভাইও গুলিবিদ্ধ হন। তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ব্যবহার করে ছাত্র আন্দোলনের দমানের উদ্দেশে ঘটনাস্থলে ছাত্র-জনতার দিকে গুলি ছোড়ে। পরিকল্পিতভাবে ওইভাবে গুলি ছোড়ার কারণে বাদীর ভাই ঘটনাস্থলে গুলিতে নিহত হন। এটি হত্যাকাণ্ড।