হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশনা চেয়ে করা রিট চলবে না মর্মে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে আবেদনের পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুবুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই (জহিরুল ইসলাম) খান পান্না। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট পূর্ণিমা জাহান।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক আর হক।
এর আগে সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে (বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে) ভর্তির নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। এ বিষয়ে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার আদেশের জন্য দিন ঠিক করেন হাইকোর্ট। এরই ধারাবাহিকতায় এ আদেশ দেন আদালত।
আদেশের বিষয়ে রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়ার বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট পদক্ষেপ নেবেন। কিন্তু এর আগে শাজাহান খান যে অসুস্থ তার পক্ষ থেকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সেখানে আবেদন করতে বলা হয়েছে। এরই আলোকে কারা কর্তৃপক্ষ অসুস্থতার বিষয়টি তদন্ত করে তার বিষয়ে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা নেবেন।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে মনে হয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে যেভাবে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, শাহজাহান খানের বিষয়েও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হতে পারে।
গত ১ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলিতে আব্দুল মোতালিব নামের এক কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনায় রাজধানীর ধানমন্ডি থানার হত্যা মামলায় গ্রেফতার শাজাহান খানের সাতদিনের রিমান্ড শেষ না করেই তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
সাতদিনের রিমান্ডে থাকা অবস্থায় শাজাহান খান অসুস্থ হওয়ায় তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হায়দারের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ধানমন্ডি থানার উপ-পরিদর্শক মো. খোকন মিয়া তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদের আদালত তার সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ৫ সেপ্টেম্বর দিনগত মধ্যরাতে ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে শাজাহান খানকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ৪ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডি থানাধীন এলাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দেন আব্দুল মোতালিব (১৪)। পরে তিনি বুকে ও গলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় গত ২৬ আগস্ট নিহতের বাবা আব্দুল মতিন বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১৭৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। হয়। এ মামলায় শাজাহানকে ২৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় ২৫০/৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।