আইফোনপ্রমীদের আরেকটা অপেক্ষার অবসান হলো। আইফোন ১৬ সিরিজ উন্মোচন করলো নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল।
গতকাল সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার কুপারতিনোর অ্যাপল পার্কে ‘ইটস গ্লো টাইম’ অনুষ্ঠানে ফোনগুলো উন্মোচন করা হয়।
প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠানে অ্যাপল তার ওয়াচ, এয়ারপড, সফটওয়্যারের আপডেটসহ নতুন নতুন পণ্য তুলে ধরেছে।
আইফোনের এই সিরিজে থাকছে চারটি মডেল- আইফোন ১৬, আইফোন ১৬ প্লাস, আইফোন ১৬ প্রো আর আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স।
এবারের আইফোনের সবগুলো মডেলের সাইড প্যানেলে যুক্ত হচ্ছে ক্যাপচার ও অ্যাকশন বাটন। ক্যাপচার বাটনের সাহায্যে ফোনের লক না খুলেই খুব সহজে ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা যাবে। খবর ইন্ডিয়া টুডে, সিএনএন
আইফোনগুলোর বৈশিষ্ট্য
এবার আইফোন ১৬ সিরিজের প্রতিটি মডেলে একটি ক্যামেরা বাটন যুক্ত করা হয়েছে যা একবার ট্যাপ করলেই ক্যামেরা চালু হবে এবং দ্বিতীয়বার ট্যাপেই আইফোন ছবি তুলবে। আর চাপ দিয়ে বাটনটি ধরে থাকলে এটি ভিডিও রেকর্ডিং শুরু করবে। বাটনটি হালকা ও বেশি চাপের পার্থক্য নির্ণয় করতে পারবে। হালকা চাপে ফোনটি ফ্রেমিং ঠিক করবে। এ ছাড়া এই বাটনের মাধ্যমে ক্যামেরা জুমও করা যাবে।
আইফোন ১৬ প্রো মডেলগুলোতে দ্বিতীয় প্রজন্মের কোয়াড পিক্সেল সেন্সরসহ নতুন ৪৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা রয়েছে। ক্যামেরাটির মাধ্যমে ৪কে ১২০ ভিডিও ধারণ করা যাবে। এ ছাড়া ৪৮ মেগাপিক্সেল আলট্রা ওয়াইড ক্যামেরার সঙ্গে অটো ফোকাস সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে। দুটি প্রো মডেলেই ৫ এক্স টেলিফটো লেন্সসহ ১২ মেগাপিক্সেল সেন্সর থাকবে। এ ছাড়া অডিও রেকর্ডিংয়ের ক্ষেত্রেই স্পেশিয়াল অডিও ক্যাপচার রয়েছে। মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে ব্যাকগ্রাউন্ডের শব্দ থেকে কথাবার্তা আলাদা করতে পারবে।
এবারের আইফোনগুলোর অন্যতন বৈশিষ্ট্য হলো এর এআই ফিচার। আইফোনের এআই ফিচার কীভাবে ব্যবহার করা যাবে এবং আইফোনে কী কী করা যাবে তার দিকনির্দেশনা ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট সিরির কাছে থেকেই পাওয়া যাবে। অ্যাসিস্টেন্টকে নির্দেশনা দিলেই এটি কাউকে ছবি পাঠাতে পারবে। ছবি এডিট করার ক্ষেত্রেও এআই ব্যবহার করা হবে। ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে বিভিন্ন বস্তু অ্যাপলের এআই এমনভাবে সরিয়ে দেবে, যেটির ছায়াও থাকবে না।
এ ছাড়া এআই দিয়ে নতুন ইমোজিও তৈরি করা যাবে। কোনো লেখার সারসংক্ষেপও তৈরি করে দেবে এআই এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সাহায্য করবে। অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স প্রম্পটের মাধ্যমে ছবিও খুঁজে দেবে এবং বিভিন্ন এআইভিত্তিক রাইটিং টুলও থাকবে। এমনকি প্রোম্পটের মাধ্যমে সিনেমাও তৈরি করে দিতে পারবে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স। আর চ্যাটজিপিটি চ্যাটবটও আরও সহজে ব্যবহার করা যাবে।
এই সিরিজের প্রো মডেলের ডিসপ্লে আকার ৬ দশমিক ৩ ইঞ্চি আর প্রো ম্যাক্সের ৬ দশমিক ৯ ইঞ্চি। এই সিরিজের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় স্ক্রিনের আইফোন আনল অ্যাপল।
আইফোনগুলোর দাম
নতুন আইফোন ১৬ এবং ১৬ প্লাসের দাম যথাক্রমে ৭৯৯ (প্রায় ৯৫ হাজার ৫৬১ টাকা) ও ৮৯৯ (প্রায় ১ লাখ ৭ হাজার ৫২১ টাকা) ডলার। আইফোন প্রো এবং প্রো ম্যাক্সের মূল্য যথাক্রমে ৯৯৯ (প্রায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৮১ টাকা) ও ১১৯৯ (প্রায় ১ লাখ ৪৩ হাজার ৪০১ টাকা) ডলার।
এই দামগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে আইফোন ১৬ সিরিজের প্রিঅর্ডার নেওয়া শুরু হবে। সিরিজটি আগামী ২০ সেপ্টেম্বরে বাজারে আসবে।