ট্রাম্প-কমলা মুখোমুখি, ছবি : সংগৃহীত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবারের মতো এক টেলিভিশন বিতর্কে উভয়ে মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন আজ।
যুক্তরাষ্ট্রের এই দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী পরস্পরের প্রতি বাক্যবাণ ছুড়েছেন, করেছেন ব্যক্তিগত আক্রমণ; যে ঘটনায় চলতি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থিতা পর্যন্ত বদলে যায়।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রথমবার সরাসরি টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিচ্ছেন কমলা হ্যারিস।
এ বিতর্ক উভয় দলের প্রার্থীর জন্য ভোটারদের সামনে নতুন করে নিজেদের নীতি ও কৌশল পরিষ্কার করার সুযোগ।
এ বিতর্কে কী দেখতে চান, সে বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন অনেক ভোটার। তাঁরা বলেছেন, রাজনৈতিক ঝগড়া নয়, তাঁরা নীতিনির্ধারণী বিষয়ে আরও বেশি বক্তব্য দেখতে চান।
উটাহ অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা ২৭ বছরের তরুণ রবার্ট অলিভারের পরিবার রিপাবলিকান পার্টির সমর্থক। কিন্তু তিনি ২০২০ সালে জো বাইডেনকে ভোট দিয়েছিলেন। এ বছর নভেম্বরে তিনি পুনরায় ট্রাম্পের পক্ষে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
রবার্ট অলিভার বলেন, তারা উভয়ে কী করতে চলেছেন (আমাদের জন্য) আমি সেটি দেখতে আগ্রহী। কমলা হ্যারিস সম্প্রতি আলোচনায় এসেছেন, খুব বেশি সাক্ষাৎকার তিনি দেননি। ডোনাল্ড ট্রাম্পের তুলনায় তিনি বেশ অচেনা। বিতর্কগুলোতে ট্রাম্প সাধারণত নিজ ধরনেই আক্রমণ করেন ও সেটা উচ্চ স্বরে।
এবার ট্রাম্পকে ভোট দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন অলিভার। তবে বিতর্কে কমলা কেমন করেন, তা দেখতে আগ্রহী তিনি। বলেন, আমি দেখতে চাই, তিনি (কমলা) যথেষ্ট প্রস্তুতি এবং প্রম্পটারদের শব্দহীন ঠোঁট নাড়া বুঝতে পারার সক্ষমতা ছাড়া বিতর্কে কেমন করেন, ট্রাম্পের সঙ্গে মুখোমুখি বিতর্কে তিনি কতটা দ্রুত প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন।
গতবার জো বাইডেনকে ভোট দিয়েছিলেন কলোরাডোর বাসিন্দা ২৮ বছরের ড্যানিয়েল ক্রামরিন। তিনি অধীর আগ্রহে কমলা-ট্রাম্প বিতর্ক দেখার অপেক্ষায় আছেন। এই তরুণ বলেন, আমার মনে হচ্ছে, কী হতে চলেছে আমি সেটি জানি। আমি জানি, কমলা হ্যারিস খুবই দক্ষ বিতার্কিক। আমি এখনো চার বছর আগে তার এবং মাইক পেন্সের বিতর্কের কথা স্মরণ করতে পারি। আমি ট্রাম্পের সঙ্গে তার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখার অপেক্ষায় আছি। মঞ্চে কেউ একজন সত্যিকারের বিরোধী শক্তি হয়ে তাকে (ট্রাম্প) সরাসরি প্রতিহত করার সক্ষমতা রাখে, এমন কাউকে পেয়ে আমি খুশি।
দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য পেনসিলভানিয়ার বাসিন্দা স্বতন্ত্র ভোটার জেসি মাজ্জোনি। ২০২০ সালে জো বাইডেনকে সমর্থন করেছিলেন তিনি। কিন্তু এবার তৃতীয় পক্ষকে ভোট দেয়ার কথা ভাবছেন। ৩১ বছর বয়সের এই নারী বলেন, সত্যি বলতে, এই বিতর্ক দেখার কোনো পরিকল্পনা আমার নেই, সরাসরি তো নয়ই। দুই প্রার্থীর কাউকে নিয়েই আমার আগ্রহ নেই। গত কয়েকটি নির্বাচনে আমি আমাদের বিতর্কের অবস্থা দেখেছি। মঞ্চ সাজানোই হয় তার জন্য, যে চিৎকার করে কথা বলতে পারে এবং কৌতুক করতে পারে, যেটাকে সংবাদের শিরোনাম করা যায়। দরকারি কোনো কথা তাদের বলতে শুনিনি আমি।
ওয়াশিংটনের বাসিন্দা কনোর লোগান ২০২০ সালে ট্রাম্পকে ভোট দেন। সেটিই ছিল তার প্রথম ভোট। তিনি মনে করেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমলে দেশের অর্থনীতি ভালো ছিল। কনোর বলেন, আমি জানতে চাই, আমাদের অর্থনীতি কবে আবার ঠিক পথে ফিরছে। অবৈধ অভিবাসী হ্রাসে দুই প্রার্থীর কী পরিকল্পনা, সেটিও জানতে আগ্রহী। একটি বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা দিতে ট্রাম্পের সক্ষমতার ওপর আমার আস্থা আছে। আমার মনে হয়, কমলা তার মতাদর্শ গোপন করছেন অথবা তা থেকে সরে গেছেন। তিনি (ট্রাম্প) বরং নিজের কর্মপরিকল্পনা জানাতে দক্ষতা দেখিয়েছেন। তবে আমার মনে হয়, ট্রাম্পের আচরণই তাঁর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা।
জর্জিয়ার তরুণ ডেমোক্র্যাট ডগলাস স্টুয়ার্ট বাইডেনের সরে দাঁড়ানোতে খুব খুশি। বলেন, তার দলের হাতে ট্রাম্পকে হারাতে এখন আগের চেয়ে ভালো সুযোগ আছে। স্টুয়ার্ট আজকের বিতর্ক দেখবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, ট্রাম্পের বিপক্ষে বাইডেন একদমই ভালো করতে পারেননি। নতুন প্রার্থী কমলা ট্রাম্পের বিপক্ষে কেমন করেন, সেটি দেখতে তাই তিনি আরও বেশি উৎসুক হয়ে আছেন।