সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ৮ পৌষ ১৪৩১

শিরোনাম: গাজীপুরে কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ   সাবেক এমপি পোটন ৩ দিনের রিমান্ডে   সংবাদ সম্মেলন করে ১০ দফা দাবি সাদপন্থিদের   বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠন   কুমিল্লায় মুক্তিযোদ্ধার মানহানির ঘটনায় প্রেস উইংয়ের নিন্দা   যশোরে আ.লীগের আত্মসমর্পণকারী ১৬৭ নেতাকর্মীর আইনজীবী আটক   ঘন কুয়াশায় একসঙ্গে ৬ ট্রাকের সংঘর্ষ, নারীসহ নিহত ২   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
নদী খুঁড়েও মিলছে না পানি, খাবারেরও তীব্র সংকট
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৩:০১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

পানির সন্ধানে শুকিয়ে যাওয়া নদীগর্ভ খুঁড়ছে মানুষ, ছবি : বিবিসি

স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ খরায় রীতিমতো পুড়ছে গোটা দক্ষিণ আফ্রিকা। এতে খাদ্য ও পানি সংকটে পড়েছে প্রায় ৭০ মিলিয়ন মানুষ। উত্তর জিম্বাবুয়ের মুদজি জেলায় শুকিয়ে যাওয়া ভমবোজি নদীতীরে জড়ো হয়েছে স্থানীয়রা ও তাদের গবাদিপশু। এ নদীতে সারা বছরই পানিপ্রবাহ থাকে। কিন্তু এখন শুধুই বালু।

দেশটির মুদজি জেলার অন্যান্য এলাকাতেও নদী আর বাঁধগুলো শুকিয়ে গেছে। ফলে কুরিমা গ্রামের এ অংশের নদীগর্ভ থেকে পানি তোলার আশায় মানুষ আসার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ফলে পানির উৎসটির ওপর তৈরি হচ্ছে অতিরিক্ত চাপ। 

নদীগর্ভের জায়গায় জায়গায় গর্ত, একটি বালতি নামানোর মতো বড়। গর্ত করে তোলা পানি দিয়ে শিশুরা গোসল করছে, মহিলারা কাপড় ধুচ্ছেন, পানি খাওয়াচ্ছেন গবাদিপশুগুলোকে।

পাঁচ সন্তানের মা গ্রেশাস ফিরি। ৪৩ বছর বয়সি এই নারী জানালেন, এখন তাকে রোজ তিন ঘণ্টা হেঁটে পানি নিতে হয়। কিন্তু এই ময়লা পানি ব্যবহারের ফলে চিন্তিত তিনি। বললেন, ‘দেখতেই পাচ্ছেন, পশুরাও আমাদের সঙ্গে একই গর্ত থেকে পানি খাচ্ছে। এখানেই মূত্রত্যাগ করে ওরা…ব্যাপারটা খুব একটা স্বাস্থ্যকর নয়। আমি জীবনে কখনও এরকম পরিস্থিতি দেখিনি।’

খাদ্য সরবরাহেও ঘাটতি পড়েছে জিম্বাবুয়েতে। দেশটির ৭.৭ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুধার মুখে। মুদজিতে পর্যাপ্ত, পুষ্টিকর খাবার কেনার সামর্থ্য আছে, এমন পরিবারের সংখ্যা অরধেকে নেমে এসেছে। 

এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিশুরা। জুন থেকে স্বল্প থেকে তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা অল্পবয়সিদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। গ্রাম খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এ কর্মসূচিও ঠিকমতো চালানো যাচ্ছে না।

মুদজি জেলার মেডিকেল অফিসার কুদজাই মাদামোম্বে বিবিসিকে জানান, তারা এখন সপ্তাহে মাত্র একদিন খাবার দিতে পারছেন। ‘বৃষ্টি হয়নি, তাই শতভাগ ফসল নষ্ট হয়েছে।’

খাদ্যের মজুত কমে আসায় আগামী মাস থেকে এ কর্মসূচি বন্ধ করে দিতে হতে পারে বলে জানান তিনি।

মাদামোম্বে জানান, মুদজির ক্লিনিকগুলোতে যেসব উৎস থেকে পানি সরবরাহ করা হতো, সেগুলোও শুকিয়ে গেছে। জেলাটির প্রধান বাঁধে আর মাত্র এক মাস সরবরাহ করার মতো পানি আছে। ফলে সবজি খেতে সেচ দেওয়ার প্রকল্প সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছে। এই একই দুর্দশার চিত্র সর্বত্র। 

৩৬ বছর বয়সি তাম্বুদজাই মাহাচি জানান, তিনি কয়েক একর জমিতে ভুট্টা, বরবটি ও চীনাবাদাম চাষ করেছিলেন। কিন্তু ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে তার পাতে খাবার জুটছে না। 

স্বাভাবিক সময়ে মাহাচি রাজধানীতে খাবার সরবরাহ করেন। কিন্তু তিনি এখন নিজেই খাবারের জন্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। অন্যের কাছ থেকে চেয়ে-চিনতে এনে সন্তানদের মুখে এখন খাবার জোটাতে হচ্ছে তাকে।

এ বছর দক্ষিণ আফ্রিকা অঞ্চলের বেশিরভাগ জায়গায় বৃষ্টি হয়নি। অথচ এ মহাদেশের কৃষি খাত পানির জন্য সেচের চেয়ে বৃষ্টির ওপর বেশি নির্ভরশীল। ফলে চলমান খরায় দক্ষিণ আফ্রিকান অঞ্চলের এক-তৃতীয়াংশ দেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ অঞ্চলের ৬৮ মিলিয়ন মানুষের খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন।

আঞ্চলিক জোট সাদার্ন আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটি (এসএডিসি) মে মাসে খরা মোকাবিলার জন্য ৫.৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা চেয়েছিল। কিন্তু আদতে সাহায্য মিলেছে খুব কম।

খারাপ খবর হচ্ছে, পানি সংকট এখনও চূড়ায় পৌঁছায়নি। এ অঞ্চলের সবচেয়ে উষ্ণ এবং শুষ্ক মাস অক্টোবর আসেইনি। 

বৃষ্টিপাতের মৌসুম নভেম্বর ও ডিসেম্বরে বৃষ্টি পড়লেও ভুট্টাচাষ করে ফসল সংগ্রহের জন্য আগামী মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ফলে সামনের কয়েক মাস তীব্র ক্ষুধার মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ।

খরায় খাদ্য সংকটে আশপাশের অন্যান্য দেশও। ভয়াবহ খরায় খাদ্যসংকটে পড়ে ক্ষুধার্ত মানুষের মাংসের জোগান দিতে হাতি, জলহস্তি, জেব্রাসহ ৭০০-র বেশি প্রাণী মারছে নামিবিয়া। এসব প্রাণীর মাংস বিতরণ করা হবে সাধারণ মানুষের মধ্যে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]