ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক তৌহিদ আলম মান্নার প্রত্যক্ষ মদদে তার ছোট শালা মাহমুদ নলছিটি বাসস্ট্যান্ডের সরকারি জমি দখল করে দোকান উঠিয়েছে।
নলছিটির সাধারণ মানুষের আতঙ্কের নাম এই তৌহিদ আলম মান্না। মান্নার দলীয় ক্ষমতার কারণে তার ছোট ভাই সাগর এবং তার ছোট শালা মাহামুদও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
৫ আগস্ট সরকার পতনের পরে নলছিটির মানুষকে জিম্মি করে লুটপাট, চাঁদাবাজি, সরকারি জমি দখল করছে। মান্নার ছোট ভাই সাগর ৫ আগস্ট নিজে নেতৃত্ব দিয়ে নলছিটি ‘মাটিভাঙ্গা টু নলছিটি’ লঞ্চঘাট রাস্তার কাজের সব মালামাল লুটপাট করে নিয়ে গেছে।
এখন তার শালা মাহামুদ নলছিটি বাসস্ট্যান্ডের সরকারি জমি দখলের মহোৎসবে মেতে উঠেছে এবং নলছিটির আরো অনেক সরকারি জমি দখল করার পরিকল্পনা করছে মান্নার ক্ষমতায়। তার অত্যাচারে নলছিটির সংখ্যালঘু পরিবারও আতঙ্কিত!
ওই বাসস্ট্যান্ডের যাত্রীছাউনি ভেঙে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের কার্যালয় নির্মাণের অভিযোগ ওঠে। বরিশাল-ঝালকাঠি আঞ্চলিক মহাসড়কের ষাটপাকিয়া বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী ছাউনিতে এ নির্মাণকাজ চলছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ছাউনি ভেঙে নলছিটি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের কার্যালয়ের কাজ শুরু করেন মুকুল হাওলাদার নামের বিএনপির এক কর্মী।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, যাত্রীদের সুবিধার্থে ২০১১ সালে সাড়ে তিন লাখ টাকা ব্যয়ে বরিশাল-পিরোজপুর মহাসড়কের ঝালকাঠি নলছিটি উপজেলার ষাটপাকিয়া বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীছাউনি নির্মাণ করে ঝালকাঠি রোটারি ক্লাব। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জায়গায় লিখিত অনুমতি নিয়ে এটি করা হয়েছিল।
গত রোববার দেখা যায়, ছাউনিটির পেছনের দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়েছে। সেখানে নতুন টিন দিয়ে ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। যাতে দলীয় লোকজন ছাউনির সামনের জায়গা ব্যবহার এবং নির্মাণাধীন অফিসে প্রবেশ করতে পারেন।
এ বিষয়ে বিএনপিকর্মী মুকুল হাওলাদার বলেন, ‘আমার দোকানের সামনে যাত্রীছাউনি করা হয়েছিল। তাই এর দেয়াল ভেঙে দিয়েছি। পরে বিএনপির লোকজনের অফিস করার জন্য আমি প্রতিশ্রুতি দিলে তাঁরা জায়গাটি দখলমুক্ত করতে সহযোগিতা করেন। তাই এখানে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা–কর্মীদের অর্থায়নে দলীয় কার্যালয় করার জন্য ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেছি। নির্মাণাধীন ঘরটির কিছু অংশ সড়ক ও জনপদ বিভাগের।’
ভৈরবপাশা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বলেন, যাত্রীছাউনিটি মুকুল হাওলাদার ভাঙচুর শুরু করলে তাঁর নেতা-কর্মীরা বাধা দেন। পরে কার্যালয় করার জন্য তার কাছ থেকে জায়গাটি ভাড়া নিয়ে কাজ শুরু করেন। কিন্তু যাত্রীছাউনিটিতে তারা কোনো ভাঙচুর কিংবা সরকারি কোনো জায়গা দখল করেননি।
ঝালকাঠি রোটারি ক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটারিয়ান জি এম মোর্শেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সড়ক ও জনপদের অনুমতি নিয়ে যাত্রীছাউনিটি করা হয়েছিল। কিন্তু এটি ভেঙে দিয়ে স্থাপনা করা হয়েছে, এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার।’
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে তারা জানেন না। দলের নাম ভাঙিয়ে অন্যায় করে কেউ পার পাবে না। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’