আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক মাস পূর্ণ হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর)। দিনটি ঘিরে ‘শহিদি মার্চ’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সারজিস আলম বলেন, ‘আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে শহিদি মার্চ করতে চাই। সারাদেশে ইউনিয়ন থেকে মহানগর- সব পর্যায়ে শহীদদের স্মৃতি ধারণ করে, আহত ভাইবোন যারা হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন, যে ভাইবোনেরা হাত-পা-চোখ হারিয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।’
যেসব রাস্তা দিয়ে যাবে ‘শহিদি মার্চ’
সারজিস আলম জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় ঢাকায় ‘শহিদি মার্চ’ শুরু হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে। এরপর নীলক্ষেত, নিউমার্কেট, কলাবাগান, মিরপুর রোড ধরে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও সংসদ ভবনের সামনে দিয়ে ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ ও রাজু ভাস্কর্য হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে কর্মসূচি শেষ হবে।
আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আপনারা বুদ্ধিবৃত্তিক মহলে যারা ফ্যাসিবাদের রাজনীতি পুনর্বহাল করতে চান, আপনারা ফেল মেরেছেন অনেক আগেই। এই ছাত্র-নাগরিক, যাদের আপনারা অগণিত সময়ের জন্য মানসিক ট্রমার মধ্যে ফেলে দিয়েছেন, তাদের রাজনৈতিক চিন্তাধারা বিকশিত হওয়ার পথটাকে আপনারা রুদ্ধ করে দিয়েছেন। সেটির দায়ভার আপনাদের নিতে হবে। সেটির দায়ভার আপনারা না নিয়ে আবার যদি রাজনীতি করার, পুনর্বাসন করার চিন্তা করেন, তাহলে সে ক্ষেত্রে এই ছাত্র-নাগরিক যারা শহীদ হয়েছেন, আমরা অনুভব করি তাদের কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে, আমাদের জবাবদিহি রয়েছে।’
সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘৬ সেপ্টেম্বর থেকে সবাইকে সংগঠিত করার জন্য বিভাগীয় ও জেলা শহর সফর শুরু করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আমরা জনগণের সঙ্গে কথা বলব, তারা কী চায় সেটা জানব, আমরাও কিছু পরামর্শ দেব। এরপর মানুষ যা চায় আমরা তা বাস্তবায়ন করব।’
এদিকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মরণে শুক্রবার থেকে সারাদেশে বিভাগীয় ও জেলা শহরে সফর কর্মসূচি শুরু করা হবে বলেও জানা গেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গত জুলাইয়ের শুরুতে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনে শিশু-কিশোর-যুবক নারীসহ অন্তত ১ হাজার জনের প্রাণহানি ও কয়েক হাজার মানুষ আহত হন।
তুমুল আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিন দিন পর গত ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ শপথ নেয়।