সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভ্যানে এক মিনিট ১৪ সেকেন্ডের লাশের স্তূপের পেছনের ঘটনা তদন্তে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অ্যাডিশনাল এসপি ও ডিএসবি কর্মকর্তার সমন্বয়ে এই চার সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই ঘটনায় ঘাতকদের চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে আশুলিয়া থানা পরিদর্শন শেষে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ।
পুলিশ সুপার বলেন, যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সেটি আমাদের নজরে এসেছে। আমাদের জায়গা থেকে যা করণীয় তা আমরা করছি। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তদন্ত করছেন। আমরা সবার সহযোগিতা পেয়েছি। কারা কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, কারা উপস্থিত ছিলেন। আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য নামগুলো প্রকাশ করছি না। খুব শিগগিরই আপনাদের সামনে তা প্রকাশ করা হবে।
আহম্মদ মুঈদ বলেন, যেগুলো ভিডিওতে এসেছে সেগুলো দেখেছি, তবে ফিজিক্যাল এভিডেন্স এখনো পায়নি। এগুলো নিয়েও আমাদের কাজ চলছে। ইতোমধ্যেই গতকাল একটি নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে। আমরা এটি নিয়েও কাজ করছি। আশা করছি, খুব ভালো একটা রেজাল্ট আসবে।
জড়িত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে অপরাধী সে যেই হোক তার নামে মামলা হবে। পুলিশ আইনের বাইরে নয়।
তিনি আরও বলেন, শুধু ছাত্র-জনতা না, আমাদের অনেক পুলিশ সদস্যকেও আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। পুলিশ হত্যার মামলাও হবে। প্রধান উপদেষ্টার সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে মানবাধিকার লঙ্ঘন হলে গুরুত্বের সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভ্যানে লাশের স্তূপের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।
ভাইরাল হওয়া এক মিনিট ১৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, দুইজন পুলিশ সদস্যের একজন হাত ও একজন পা ধরে চেংদোলা করে ভ্যানে লাশের স্তূপের ওপর নিক্ষেপ করছেন। সর্বশেষ লাশটি তুলে একটি র্যাক্সিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। শেষে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়।
ভিডিওর এক মিনিট ৬ সেকেন্ডে একটি পোস্টার দেখা যায়, যা স্থানীয় যুবলীগের ধামসোনা ইউনিয়ন সভাপতি প্রার্থী ও ধামসোনা ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আবুল হোসেনের। সেই পোস্টারটি দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, ভিডিওটির ঘটনাস্থল আশুলিয়া থানার সামনেই।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনকারীরা ৫ আগস্ট ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বাইপাইল এলাকায় জমায়েত হতে থাকেন। পরে শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের খবরে আন্দোলনকারীরা আশুলিয়া থানার দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ১৫ জনের মৃত্যু হয় (ভ্যানে তোলা লাশের হিসাব বাদে)।