প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৪, ৩:২২ পিএম আপডেট: ২৯.০৮.২০২৪ ৩:২৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
‘আয়নাঘর’ কায়দায় চট্টগ্রাম নগরের নতুন ব্রিজ এলাকায় টর্চার সেল খুলে ১৭নং রোডের পরিবহন শ্রমিকদের আওয়ামী লীগ নেতা জানে আলমের নির্যাতন ও নিপীড়ন কার্যক্রম চলতো।
কেউ তাকে চাঁদা না দিলে লোহার হাতল, হকিস্টিক দিয়ে আঘাত করে হাত-পা থেঁতলে দিত। এমন নির্যাতনের শিকার অন্তত ১৫০ জনেরও অধিক সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও মেক্সিচালক সংবাদ সম্মেলনে বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁদেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে নির্যাতনের শিকার হওয়া চট্টগ্রাম অটো টেম্পো শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিকরা এমন অভিযোগ করেন।
তারা কোটা আন্দোলনের নিহত শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাব্বি হত্যা মামলার অন্যতম আসামি জানে আলমকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ইমাম। উপস্থিত ছিলেন সভাপতি জাহেদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো.আলমগীর, কার্যকরী গোলাম মোস্তফা, মোহাম্মদ আলমগীর, কায়সার কালু, নূর বশর প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে ১৭ নম্বর রোডে তিন শতাধিক টেম্পো থেকে নানা কায়দায় জনে আলমের মাসে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলে চালকরা। সেই টাকায় বাকলিয়া থানা ও ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া শ্রমিক ও ইউনিয়নের নেতাদের মামলা হামলা দিয়ে হয়রানি করেছে জানে আলম। ২০১২ সালে নতুন ব্রিজে টেম্পোতে হেলপার হিসেবে কাজ করতে আসা জানে আলম এই কয়দায় বছরে কোটিপতি বনে গেছে।
যেখানে দিনশেষে চালক হেলপারদের নিত্যদিনের বাজার সদাই কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সেখানে চাঁদাবাজির টাকায় বাকলিয়া মৌজার রাজাখালী এলাকায় গতবছর জায়গা কিনেছেন জানে আলম (বিএস দাগ-৬৬৫৯ ও ৬৬৬৪)। এছাড়া চন্দনাইশে একটি কমিউনিটি সেন্টারের মালিকানা ও প্রাইভেটকারও কিনেছেন এই চাঁদাবাজির টাকায়।
তার এসব অবৈধ রাজত্ব কায়েম করতে নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করেছে। তারাই বিভিন্ন সময় শ্রমিকদের উপর লাঠি, পাইপ ও কিরিচ নিয়ে হামলা করেছে। র্যাব পুলিশের একাধিক অভিযানে তারা বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। টর্চার সেল থেকে লাঠি, পাইপ ও কিরিচ উদ্ধার করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে জানে আলম তার বাহিনী নিয়ে হামলা করেছে। এ ঘটনার নতুন করে চান্দগাঁও, বাকলিয়া ও কোতোয়ালিতে তিনটি মামলা করা হয়েছে। ৫ আগস্ট জানে আলম পালিয়ে গেলেও আড়াল থেকে আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জন দিয়ে মামলা করার চেষ্টা করছে। জানে আলমের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে দুজন জিডি করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিকরা নিজেদের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে দাবি করেন।