ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের তিক্ততা তুঙ্গে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়াবিরোধী প্রচার-প্রচারণার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সাংবাদিক, আইনজীবী, ব্যবসায়ীসহ ৯২ জন মার্কিন নাগরিকের রাশিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে রুশ সরকার।
গতকাল বুধবার (২৮ আগস্ট) রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের রুশ বিরোধী নীতির প্রতিক্রিয়ায় আরোপ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাশিয়ার পরারাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ইউক্রেনকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা করার অনুমতি দিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব ‘আগুন নিয়ে খেলছে’।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে প্রকাশিত নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া ৯২ জনের তালিকায় রয়েছেন- যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২৪ জন সাংবাদিক। তাদের মধ্যে ১৪ জন ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে, ৫ জন নিউইয়র্ক টাইমসে এবং ৪ জন ওয়াশিংটন পোস্টে কর্মরত আছেন।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, বাইডেন প্রশাসন মস্কোর ওপর অন্যায় ভাবে রুশ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, বিজ্ঞানী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক এবং মিডিয়া সংস্থাগুলোর ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর প্রতিক্রিয়া এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার তালিকায় শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা ছাড়াও নিরাপত্তা সংস্থা এবং বিশেষ সেবার অন্যান্য পর্যায়ের কর্মকর্তারা, মূল প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তা ব্যক্তিরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যারা ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর কাছে অস্ত্র সরবরাহ ও কিয়েভ সরকারকে সহায়তা করছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা খবর প্রচার এবং তথাকথিত ‘হাইব্রিড যুদ্ধের’ প্রচারণায় যুক্ত থাকা যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের সম্পাদকীয় কর্মী এবং প্রতিবেদকরাও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছেন ওয়াশিংটন পোস্টের ডেভিড স্টার্ন, অ্যাডাম টেলর, শেন হ্যারিস, নিউ ইয়র্ক টাইমসের লারা জেকস, অ্যান্ড্রু ক্রেমার, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এডিটর-ইন-চিফ এমা টাকার এবং প্রাক্তন মস্কো ব্যুরো প্রধান নাথান হজ।
নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক ইভান গারশকোভিচ বলেছেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞা হাস্যকর। মুক্ত সংবাদপত্রের ওপর আক্রমণের অংশ এটি।’ ইভান ১৬ মাস রাশিয়ায় আটক থাকার পর বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে চলতি মাসে মুক্তি পেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, দিন যত গড়াচ্ছে ততই জটিল হয়ে উঠছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতি। দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চালিয়েও ইউক্রেনকে কাবু করতে পারেননি পুতিন। বরং পশ্চিমাদের সহায়তায় আরও অগ্রসর হচ্ছে জেলেনস্কি বাহিনী। সূত্র: তাস