বিমানবন্দরে সাংবাদিক শফিক রেহমান, ছবি : সংগৃহীত
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমান ও বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান ভুঁইয়া মিল্টন দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরেছেন।
রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তারা।
সাংবাদিক শফিক রেহমান আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৮ সালে দেশ ছাড়েন। দীর্ঘ ৬ বছর পর দেশে ফিরলেন তিনি। শফিক রেহমানের স্ত্রী তালেয়া রেহমানও সঙ্গে ছিলেন। আর বিএনপি নেতা মিল্টন দীর্ঘ ৯ বছর পর দেশে ফিরলেন।
শফিক রেহমান ও বিএনপি নেতা মিল্টনকে বিমানবন্দরে করতালি ও ফুলে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সাংবাদিক নেতা এবং বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরে সহকর্মীদের কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তারা।
সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, সরদার ফরিদ আহমেদ, তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু, আলফাজ আনাম, যায়যায়দিনের সাংবাদিক মাহবুব আলম, শাহীন চৌধুরী, ফেরদৌস মামুন, অধ্যাপক খান মনোয়ারুল ইসলাম, ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ, বিএনপি নেতা কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, প্রকৌশলী মো. মোস্তাফা-ই জামান সেলিম (সিআইপি), যুবদল নেতা কৃষিবিদ সানোয়ার আলম, ছাত্রদলের সাবেক নেতা জহিরুল ইসলাম বিপ্লব, রাশিদুল ইসলাম রিপন, বিএনপি নেতা আশরাফ শিকদার, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রাশেদ রহমান, ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম তারিকসহ অসংখ্য নেতাকর্মী। আরও উপস্থিত ছিলেন শফিক রেহমান প্রত্যাবর্তন কমিটির সজীব ওনাসিস, জাহিদুল ইসলাম রনি, রাজীব আহসান চৌধুরী পাপ্পু, হাসানুর রহমান।
শফিক রেহমান বলেন, ‘দেশে ফিরে শেখ হাসিনাকে খুব অনুভব করছি। তার পিতা ও তাকে উপাধি দিয়েছি। একজন বীর পলাতক শ্রেষ্ঠ ও বীর পলাতক উত্তম। আমি তার মৃত্যুদণ্ড চাই না। মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে। সবাইকে বিজয়ের শুভেচ্ছা। আমি একাত্তরে দেশে ফিরতে পারিনি। এবার দেশে ফিরলাম। ব্যক্তি পূজা বন্ধ করুন। ব্যক্তি পূজা ইসলাম ধর্মের বিরোধী। দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শহীদ জিয়ার অবদান বলে শেষ করা যাবে না। এবারের আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের পুনর্বাসন করতে হবে।’
মিজানুর রহমান ভুঁইয়া মিল্টন বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর স্বৈরাচার শেখ হাসিনামুক্ত বাংলাদেশে ফিরেছি। এটা আনন্দদায়ক খবর।’
জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যা চেষ্টা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে ডিবির পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট পল্টন থানায় মামলা করেন। দণ্ডবিধির ৩০৭ এবং ১২০-বি ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। ওই মামলার আসামী শফিক রেহমান ও মিজানুর রহমান ভুঁইয়া মিল্টন।
পরবর্তীতে সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পুলিশ। মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন, জাতীয়তাবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন, তার ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং তার তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের মামলায় আসামি হওয়ায় মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় তারা এতদিন দেশে ফিরতে পারেননি। শনিবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে মিল্টন যুক্তরাজ্যে পৌঁছান। ওই মামলার প্রধান আসামি সিনিয়র সাংবাদিক শফিক রেহমানও দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে ছিলেন। আজ তারা একসঙ্গে দেশে ফিরলেন।