র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে গুলিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার দারুননাজাত ইসলামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী জোবাইদ হোসেন ইমন নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের নামে মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে মামলাটির আবেদন করেন আব্দুল্লাহ আবু সাইদ ভূঁইয়া নামে এক ব্যক্তি।
এ সময় বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে মামলাটি এজাহার হিসেবে নেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, তাজুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, হাছান মাহমুদ, মোহাম্মদ এ আরাফাত, সালমান এফ রহমান, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক হারুন অর রশীদ, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ড. খ মহিদ উদ্দিন, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) হারুন অর-রশীদ এবং যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
এ ছাড়াও মামলায় র্যাবের হেলিকপ্টার টহল টিমের অজ্ঞাত সদস্য এবং তাদের কমান্ডিং অফিসারদের অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ছাত্রসমাজ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করলে ইমন গণআন্দোলনের সাথে ঐক্যমত পোষণ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনে শরীক হয়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে শেখ হাসিনা ১৪ জুলাই গণভবনে প্রেস কনফারেন্সে আন্দোলনকারী ছাত্রদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে অভিহিত করেন। এতে আন্দোলনকারীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন আরও জোরদার করে।
এ অবস্থায় ওবায়দুল কাদের ১৫ জুলাই ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের মোকাবিলা করার জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট’ মর্মে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করে ছাত্রলীগকে গণহত্যার নির্দেশ দেন।
এরই ধারাবাহিকতায় আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনদের পরিকল্পনায় ও প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় আন্দোলনকারীদের নিষ্ঠুরভাবে দমনের জন্য নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের দেখামাত্র গুলি করে হত্যার নির্দেশ দেন।
তাদের এ নির্দেশ পালনের উদ্দেশ্যে ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর জন্য নিজ নিজ বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশনা দেন চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, হারুন-অর-রশীদ, হাবিবুর রহমান। তাদের নির্দেশে বাস্তবায়ন করেন অধঃস্তন কর্মকর্তারা।
গত ১৯ জুলাই র্যাব সদস্যরা মোহাম্মদপুর আল্লাহ করিম মসজিদে হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোঁড়ে। এর একটি গুলি ইমনের বাম কানের ওপর দিয়ে প্রবেশ করে ডান কানের নিচ দিয়ে চোয়াল ভেদ করে বেরিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ইমন।