রাজধানীর কাফরুল থানাধীন ঢাকা মডেল ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফয়জুল ইসলাম রাজনকে (১৮) গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার (১৪ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আহম্মেদ হুমায়ুন কবিরের আদালতে মামলার আবেদন করেন রাজনের ভাই রাজিব (৩২)।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে কাফরুল থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর এটি তার বিরুদ্ধে তৃতীয় মামলা।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সোহেল রানাকে ছয় মাস তিন দিন গুমের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভিক্টিম নিজেই।
বুধবার ঢাকার সিএমএম আদালতে গুমের শিকার হওয়া আইনজীবী সোহেল রানা মামলা দায়েরের পর শুনানি করলে আদালত তা মঞ্জুর করে উত্তরা পশ্চিম থানাকে এহজাহার হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন।
মামলায় ভিক্টিম অভিযোগ করেন, ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর রোডে হঠাৎ অজ্ঞাতব্যক্তি তার নাম জানতে চেয়ে তার বন্ধুসহ তাকে হায়েচ গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায়। গাড়িতে হাতকড়া পরিয়ে ও চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। কোনো একটি ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে তাকে রেখে তাকে ইলেক্ট্রিক শক দেয়া হয় বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও শহিদুল হকসহ অজ্ঞাত আরও ২১ জনকে আসামি করা হয়।
এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ে ঢাকার মোহাম্মদপুরে মুদি দোকানদার আবু সায়েদকে হত্যার অভিযোগে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়। পরে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী। এস এম আমীর হামজা নামে এক ব্যক্তি আবেদনটি করেন।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন: সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, ডিএমপির সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ ও ডিএমপি সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯ জুলাই বিকেলে মোহাম্মদপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। সে সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন মুদি দোকানদার আবু সায়েদ।
আবেদনকারী বলেন, শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের নির্দেশেই গুলি করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় ৪০ ফিট চৌরাস্তায় কোটা আন্দোলনের সমর্থনে চলমান মিছিলে পুলিশের গুলিতে মারা যান আবু সায়েদ।