প্রকাশ: বুধবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৪, ১:০০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গঠন এবং কিলো ফ্লাইটের নেতৃত্ব দেওয়া বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান, এয়ার ভাইস মার্শাল সুলতান মাহমুদ বীর উত্তমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বুধবার (১৪ আগস্ট)।
শুধু মুক্তিযুদ্ধেই নয় স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে আধুনিক এবং যুগোপযোগী করে তুলতে এবং দেশ গঠনে সুলতান মাহমুদ বীর উত্তমের অবদান অপরিসীম, তাই তিনি পেয়েছিলেন স্বাধীনতা পুরস্কার।
১৯৪৪ সালের ৩ মে ফেনীতে নুরুল হুদা এবং আঙ্কুরের নেছা পরিবারের ঘর আলো করে জন্মগ্রহণ করেন সুলতান মাহমুদ। ১৯৬২ সালের পহেলা জুলাই পাকিস্তান বিমান বাহিনীর জিডি পাইলট হিসেবে কমিশন লাভ করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয় সুলতান মাহমুদের পুরো পরিবার। শুরুতে দুই নম্বর সেক্টর এবং পরে এক নম্বর সেক্টরে অপারেশন কমান্ডার হিসেবে গেরিলা বাহিনীকে সুসংগঠিত করেন। এরপর তিনি গেরিলা অপারেশন করে চট্টগ্রামের মদুনাঘাট পাওয়ার স্টেশন সফলভাবে ধ্বংস করেন এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।
১৯৭১ সালের ২৮ সেপ্টম্বর ভারতের নাগাল্যান্ড বিমান ঘাঁটিতে গঠন করা হয় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রথম কিলো ফ্লাইট। ৯ জন পাইলট, ৬৭ জন টেকনিশিয়ান, একটি এলয়েট থ্রি হেলিকপ্টার, একটি অটার ও একটি ডিসি থ্রি ডেকোটা উড়োজাহাজ নিয়ে শুরু হয় যাত্রা। কিলো ফ্লাইটের নেতৃত্ব দেন সুলতান মাহমুদ।
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের চুড়ান্ত পর্বে প্রথম আক্রমন করেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কিলো ফ্লাইটের সদস্যরা। অত্যন্ত নিচ দিয়ে উড়ে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল তেলের ডিপোতে আঘাত হানেন স্কোয়াড্রন লিডার সুলতান মাহমুদ ও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট বদরুল আলমের নেতৃত্বে এলয়েট হেলিকপ্টার। সুলতান মাহমুদের সাহসী অপারেশনে ভেঙে যায় হানাদারদের মনোবল।
স্বাধীনতার পর বিমান বাহিনীকে আধুনিক করে গড়ে তুলতে কাজ শুরু করেন সুলতান মাহমুদ। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮১ সালের ২৩ জুলাই থেকে ১৯৮৭ সালের ২২ জুলাই পর্যন্ত বিমান বাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব অত্যন্ত সফলতার সাথে পালন করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান, বিমান বাহিনী প্রধান হিসেবে একটি সুসংগঠিত ও কার্যকরী বাহিনী গড়ে তোলা এবং দেশ গঠনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৮ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন দেশের সূর্য সন্তান সুলতান মাহমুদ।
২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন এয়ার ভাইস মার্শাল সুলতান মাহমুদ বীর উত্তম। সুলতান মাহমুদের অবদান সারাজীবন কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে বাঙালি জাতি।