বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ‘গণহত্যার’ ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ যাদের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাদের বিচার করার উদ্যোগ নেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
বুধবার (১৪ আগস্ট) আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন।
আসিফ নজরুল জানান, গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোর বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা হবে। আন্দোলনকে কেন্দ্র করে একই সময়ে ঢাকায় হওয়া মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলাগুলো আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে। আর বাকি মামলাগুলো ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সাবেক সরকারের সরকারপ্রধানসহ অন্য যারা জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে, যাদের আদেশ নির্দেশ থাকার অভিযোগ রয়েছে, আমরা পত্রপত্রিকায় কিছু মন্ত্রীর নাম দেখেছি। আমরা এখানে কোনো ছাড় দেব না। আমরা বিদায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যদেরও যদি কমান্ড রেসপনসিবিলিটি থাকে, আমরা সেটা পর্যন্ত খতিয়ে দেখব।’
এই বিচার প্রক্রিয়ার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থাকেও পুনর্গঠন করার কথা বলেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘একটি ইনভেস্টিগেশন টিম আছে, প্রসিকিউশন টিম আছে। এগুলোকে আমরা রিঅর্গানাইজড করার চেষ্টা করছি, আদালতটা একটু পরে করব। ইনভেস্টিগেশন আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে করার চেষ্টা করছি। জাতিসংঘ থেকে বারবার আমাদের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বিচারের সত্যিকারের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘের সর্বাত্মক তত্ত্বাবধানে আমাদের ইনভেস্টিগেশন টিম কাজ করবে। সেটার লক্ষ্যে সব উদ্যোগ গ্রহণ করব।’
এ বিষয়ে ঢাকায় জাতিসংঘের আসাবিক প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, ‘তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। সহযোগিতা চাইব। এ ছাড়া, আমাদের আরও উচ্চ পর্যায় থেকে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট সংস্থা আছে, উনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। আশা করছি, দ্রুত এটা শুরু করতে পারব।’
বিচার বিভাগীয় সব কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের দেশে-বিদেশে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব বিবরণী আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। তার সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।