ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর থেকে ভারতে অবস্থান করছেন তিনি। তবে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই প্রথম নীরবতা ভেঙে দেশবাসীর উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন।
গত ৭ আগস্ট দিল্লি থেকে প্রচারিত এই খোলা চিঠিতে তিনি স্পষ্ট করেই তার পদত্যাগের কারণ উল্লেখ করেছেন। এই খোলা চিঠিটি ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
চিঠিটি নিম্নরূপ
আমি পদত্যাগ করেছি, শুধুমাত্র লাশের মিছিল যেন আর না দেখতে হয়। তোমাদের (ছাত্রদের) লাশের উপর দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চেয়েছিল ওরা, আমি তা হতে দিইনি, ক্ষমতা দিয়ে এসেছি। ক্ষমতায় আমি থাকতে পারতাম যদি ‘সেন্ট মার্টিন দ্বীপ’ আর ‘বঙ্গোপসাগর’ আমেরিকার হাতে ছেড়ে দিতাম। অনুরোধ রইল তোমরা ব্যবহৃত হোয়োনা।
আমি বলে এসেছি আমার সোনার সন্তানদের যারা লাশ করে ঘরে ফিরিয়েছে তাদের যেন বিচার করা হয়। হয়তো আজ আমি দেশে থাকলে আরও প্রাণ ঝরত, আরো সম্পদ ধ্বংস হত। আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি, তোমাদের জয় দিয়ে এসেছি, তোমরা ছিলে আমার শক্তি, তোমরা আমাকে চাওনি, আমি নিজেই তখন চলে এসেছি, পদত্যাগ করেছি।
আমার কর্মী যারা আছেন, কেউ মনোবল হারাবেন না। আওয়ামী লীগ বার বার উঠে দাঁড়িয়েছে। আপনারাই দাঁড় করিয়েছেন। আশাহত হবেন না। আমি শিঘ্রই ফিরব। ইনশাআল্লাহ।
পরাজয় আমার হয়েছে কিন্তু জয়টা আমার বাংলাদেশের মানুষের হয়েছে। যে মানুষের জন্য আমার বাবা, আমাদের পরিবার জীবন দিয়েছে। খবর পেয়েছি ইতিমধ্যে অনেক নেতা কর্মীকে হত্যা ও বাড়ি ঘরে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করেছে।
আল্লাহ অবশ্যই আপনাদের সহায় হবেন। আমি আমার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আবারও বলতে চাই, আমি কখনোই তোমাদের রাজাকার বলিনি। আমার কথাটা বিকৃত করা হয়েছে। ওইদিনের সম্পূর্ণ ভিডিও তোমাদের দেখার অনুরোধ রইল। তোমাদের বিপদগ্রস্ত করে একদল তার সুবিধা নিয়েছে। তোমরা ঠিকই তা একদিন অনুধাবন করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।
ভালো থেকো আমার দেশের মানুষ, ভালো রেখো আমার সোনার বাংলাকে,
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু,
শেখ হাসিনা (বুধবার ০৭.০৮.২০২৪, নতুন দিল্লি, ভারত)