ঘরের মাঠে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজন করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত ক্রীড়া সংশ্লিষ্টদের অনেকেই এখন আড়ালে। তাদের পাশাপাশি দেশের স্বাভাবিক নিরাপত্তা নিয়েও কিছুটা শঙ্কা রয়েছে।
নিরাপত্তা সংক্রান্ত সেই নিশ্চয়তা পাওয়ার লক্ষ্যে এবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের কাছে চিঠি দিয়েছে বিসিবি।
তবে এই আলোচনা যখন উঠেছে, ততক্ষণে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নিয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন ১৭ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি। ইতোমধ্যে তাদের দায়িত্বও বন্টন করা হয়েছে। এদিকে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বিসিবির কাছে জানতে চেয়েছে আইসিসি। সেটি সেনাপ্রধানের সঙ্গে কথা বলেই নিশ্চিত করতে চায় বিসিবি। সে উদ্দেশেই তার কাছে চিঠি দিয়েছেন বিসিবি পরিচালক ও আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ মিঠু।
এ নিয়ে বিসিবি পরিচালক ও আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ মিঠু ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে বলেছেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি টুর্নামেন্ট আয়োজন করার। সত্যি বলতে আমরা খুব বেশি লোক দেশে নেই। বিশ্বকাপের জন্য নিরাপত্তা চেয়ে সেনাপ্রধানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে আমাদের হাতে আর মাত্র দুই মাস সময় আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আইসিসি আমাদের সঙ্গে দুই দিন আগে যোগাযোগ করেছিল। আমরা তাদের বলেছি দ্রুত সময়ের মধ্যে জানাব। আজকে (গতকাল বৃহস্পতিবার) অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে, তবুও তাদেরকে নিশ্চয়তা দিতে হবে। এটা আমরা দিতে পারব না, এটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিতে হবে। এজন্য সেনাপ্রধানকে চিঠি দিয়েছি।’
উল্লেখ্য, ১০ দলের অংশগ্রহণে আগামী ৩-২০ অক্টোবর পর্যন্ত নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ১৮ দিনের এই টুর্নামেন্টের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে দুটি ভেন্যু। মিরপুর শের-ই বাংলা ও সিলেটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে বিশ্বকাপের ম্যাচ। তবে তার আগে আইসিসি বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখে ১০ আগস্টের মধ্যে একটি মূল্যায়ন জানাতে পারে বলে উল্লেখ করেছে ক্রিকবাজ।
এদিকে, দেশের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া ফেডারেশন বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আওয়ামী লীগেরও এমপি ছিলেন। শুধু এমপিই নন, তিনি সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজনও ছিলেন, ফলে জানুয়ারিতে গঠিত মন্ত্রীসভায় তার কাঁধে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও দেওয়া হয়। তাই পট পরিবর্তনের পর পাপন অনেকটা আত্মগোপনে! তিনি কোথায় আছেন ক্রিকেট বোর্ডের কেউ জানেন না।
একইভাবে বোর্ডে পাপনের পরই অন্যতম প্রভাবশালী পরিচালক ছিলেন ইসমাইল হায়দার মল্লিক। তিনি ছাড়াও বিসিবির শফিউল আলম নাদেল, নাইমুর রহমান দুর্জয়, আ জ ম নাসির সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। জালাল ইউনুস, আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি, কাজী ইনাম আহমেদ, তানভীর আহমেদ টিটো সরাসরি রাজনীতি না করলেও, তারা আওয়ামীমনা হিসেবেই স্বীকৃত। তাদের কারও ভাই, বাবা কিংবা দুলাভাই আওয়ামী লীগের বড় নেতা।