ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে একাগ্রতা প্রকাশ করেছেন দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। অহিংস এই আন্দোলন যখন সহিংসতায় রূপ নেয়, তখন মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছে সাধারণ মানুষজনও। তাদের পাশাপাশি সংঘাত-সহিংসতার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তারকাশিল্পীরাও।
এ অবস্থায় গত বুধবার রাতে এক ফেসবুক পোস্টে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ড ক্রিপটিক ফেইট জয় বাংলা কনসার্টে পারফর্ম করা থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত জানায়। এর খানিকটা পরে বুধবার মধ্যরাতে সামাজিক মাধ্যমে একই সুর তোলে আরেক ব্যান্ড আবরোভাইরাস।
এক ফেসবুক পোস্টে তারা জানায়, আর কখনওই জয় বাংলা কনসার্টের পারফর্ম করবে না আবরোভাইরাসের দল। তবে শুধু ক্রিপটিক ফেইট বা আবরোভাইরাসই নয়। তাদের জয় বাংলা কনসার্ট বয়কট করার ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আরও একটি ব্যান্ডদল নেমেসিস একই ঘোষণা দেয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে নেমেসিস জানায়, গত দুই সপ্তাহে দেশে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষাপটে জয় বাংলা কনসার্টে পারফর্ম করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে ব্যান্ডদলটি। নেমেসিস এর কথায়, ‘আমরা আর কখনই জয় বাংলা কনসার্টে পারফর্ম করব না।’
ওই ফেসবুক পোস্টে নেমেসিস আরও উল্লেখ করে, ‘কিন্তু কথা এখানেই শেষ হতে পারে না। আমাদের আরও কথা বলার আছে। আগেও বলেছি, এখন আরও জোরে বলতে হবে। আমাদের সবার বলতে হবে। আমাদের প্রজন্ম আমরা ৩০ বছর ধরে একটা ভয়ের সংস্কৃতিতে বড় হয়েছি। গানে গানে প্রতিবাদ করা ছাড়া মনে হত আর কিছুই করার নেই। বয়সে ছোট ছিলাম, ভাবতাম আমাদের কথা কেই বা শুনবে। কিন্তু আর কত ভয়?’
নেমেসিস আরও লেখে, ‘বর্তমান প্রজন্ম আমাদের দেখিয়ে দিচ্ছে যে আমরা যদি সাহস জোগাই, আমরা সবাই কথা বলতে পারব, ভুলকে ভুল বলার সাহস রাখতে পারব। কারণ আমরা সবাই একটি ন্যায় সমাজ দেখতে চাই ও সত্যের সংস্কৃতি গড়তে চাই। তাই কথা বলা থামানো যাবে না, অন্যায় দেখে প্রতিবাদ করা থামানো যাবে না। আপনারা করছেন, আমরা করছি, আরও অনেক মানুষ করবে। সময় লাগতে পারে, কিন্তু সবাই জেগে উঠছে।’
উল্লেখ্য, দেশের সংগীত শ্রোতাদের পছন্দের তালিকায় ওপরের সারিতে রয়েছে ক্রিপটিক ফেইট, আবরোভাইরাস ও নেমেসিস এর মত ব্যান্ডগুলো। এই তিন ব্যান্ডের আকর্ষণে বিভিন্ন বছর আয়োজিত জয় বাংলা কনসার্টে বিপুল সংখ্যক শ্রোতারা জমায়েত হয়। তবে এই তিন ব্যান্ড ছাড়াও চলমান এই পরিস্থিতির কারণে আরও বেশ কয়েকজন সংগীতশিল্পী জয় বাংলা কনসার্টে পারফর্ম করা থেকে সরে আসার কথা জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন সংগীত শিল্পী সিনা হাসান ও পপাই বাংলাদেশের সদস্যরা।