সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: নভেম্বরের ২৩ দিনে এলো ২০ হাজার ৭১৬ কোটি টাকার রেমিট্যান্স   সোহরাওয়ার্দী-কবি নজরুল কলেজে ভাঙচুর, পরীক্ষা স্থগিত   ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনা   ডেঙ্গুতে একদিনে বছরের সর্বোচ্চ মৃত্যু, আক্রান্ত ১০৭৯   মহানবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তিতে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব   সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দেয়ার সময় বাড়লো   জেদ্দায় চলছে আইপিএলের মেগা নিলাম   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
বেদনায় বাকরুদ্ধ বাঙালির শোকের শাশ্বত প্রহর
ড. কাজী এরতেজা হাসান
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০২৪, ১২:৩১ এএম আপডেট: ০৬.১১.২০২৪ ৬:৫৪ এএম | অনলাইন সংস্করণ

বাঙালির জীবনে আগস্ট অনেক হারানো বেদনা নিয়ে আসে। অনেক শোক আর বেদনাময় স্মৃতির পসরা সাজিয়ে আসে। স্বাধীন বাংলাদেশে এ মাসে বাঙালি জাতির ওপর নেমে আসে এক কালো থাবা। বাঙালির ইতিহাসে এক কলঙ্কিত অধ্যায় শুরু হয় এ মাস থেকে । এ মাসেই ক্ষমতালোভী, পাষণ্ড, বর্বর কতিপয় সামরিক অফিসারের হাতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে ধনামন্ডির ৩২নং বাড়িতে সপরিবারে প্রাণ হরিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাইতো প্রতি বছর বাঙালি জাতির জন্য এদিনটি জাতীয় শোকাবহের মাস।

আগস্ট মাস এলেই মনে পড়ে যায় সেই ভয়াবহ স্মৃতি, যা আমাদের বেদনার্ত করে তোলে। যে বিশাল হৃদয়ের মানুষকে কারাগারে বন্দি রেখেও স্পর্শ করার সাহস দেখাতে পারেনি পাক-হানাদার বাহিনী অথচ স্বাধীন বাংলার মাটিতেই তাকে নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়েছে। ৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে প্রাণ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল। এই ঘৃণ্যতম হত্যাকা- থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগনে যুবনেতা ও সাংবাদিক শেখ ফজলুল হক মনি, তার সহধর্মিণী আরজু মনি ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও আত্মীয়স্বজন। 

কিন্তু সেদিন ভাগ্যের জোরে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া। বিশ্বের কোনো দেশে এমন নজির নেই। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পাকিস্তানে আনন্দ মিছিল হয় এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেছেন, ‘আমরা আজ পূর্ণরূপে স্বাধীনতা পেয়েছি। যদিও বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের এভাবে হত্যা করা বাঙালি জাতির ঠিক হয়নি।’ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নোবেলজয়ী তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির নেতা উইলি ব্রানডিট বলেন, ‘মুজিবকে হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না। যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে, তারা যেকোনো জঘন্য কাজ করতে পারে।’ বাংলাদেশ যত দিন থাকবে, তত দিন বাঙালি জাতিকে এই ভুলের মাশুল দিতে হবেই। কিছু স্বার্থলোভী সেনাসদস্যদের কারণে আজ আমরা খুনি এবং কৃতঘ্ন জাতিতে পরিণত হয়েছি। এদের বিচার এ দেশের মাটিতেই আংশিক হয়েছে, বাকিটাও হবে- দেশের জনগণের এই প্রত্যাশা।

বাংলার ইতিহাসের শিরা-উপশিরায় যার নাম, তিনি আর কেউ নন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৮ সালের মার্চে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে ৭১-এর ৭ মার্চের ভাষণ, ২৬ মার্চে স্বাধীনতার ঘোষণাসহ প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন মূল ব্যক্তি। অতঃপর তার হাত ধরে ৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ নামক একটি দেশ। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে এসেই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান বঙ্গবন্ধু। ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি এ দেশকে গড়তে চেয়েছিলেন। সেই পথ ধরেই এগোচ্ছিলেন, কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। যে জাতির জন্য তার এক বিশাল আত্মত্যাগ, সেই জাতিরই কিছু কুলাঙ্গার সন্তানরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কাল রাতে সপরিবারে তাকে হত্যা করে। হত্যাযজ্ঞ থেকে রেহাই পায়নি দশ বছরের শিশু শেখ রাসেলও। আল্লাহর অশেষ রহমতে দেশের বাইরে থাকার কারণে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য দুই কন্যা শেখ রেহানা ও শেখ হাসিনা বেঁচে যান। বঙ্গবন্ধু ভোলার নয়, বাঙালির রক্তে মিশে আছেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ও অবদান ইতিহাসের পাতায় লেখা আছে এবং থাকবে। রাজনীতির ধ্রুবতারা, প্রতিবাদের অনুপ্রেরণা আমাদের জাতির পিতা। শোকের মাসে সকল শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। 

সাম্প্রতিক সময়ে আবারো পাকিস্তানের প্রেতাত্নারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এই শোকের মাসে শোককে শক্তিতে শানিত করে মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতেই হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস অবিচল। তাই যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের শপথ নিতে হবে আমাদের। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।


লেখক:
সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক ভোরের পাতা, দ্য পিপলস টাইম;
সাবেক সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত), সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ; 
সহ-সভাপতি, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ; 
সদস্য, ধর্ম বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ;
সাবেক পরিচালক, এফবিসিসিআই; 
চেয়ারপারসন, ভোরের পাতা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]