রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: সৌদি ফাউন্ডেশনের বৃত্তি, বাংলাদেশিদের আবেদনের সুযোগ   আইপিএলের মেগা নিলাম শুরু বিকেলে   সরকারি চাকরিতে ২২ হাজার নতুন নিয়োগ, ঘোষণা দুপুরে   সৌদি আরবে ২০ হাজার প্রবাসী গ্রেপ্তার   ব্যাটারি রিকশাচালকদের ফের যাত্রাবাড়ী মোড় অবরোধ   বাড়ছে শীতের তীব্রতা, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কুড়িগ্রামে    ‘গাজা কোলা’ কোমলপানীয় হাতে শক্ত প্রতিরোধের প্রত্যয়   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
সহিংসতার সুষ্ঠু তদন্তে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০২৪, ৬:২২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সহিংসতার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘের কাছেও আবেদন করেছি, আন্তর্জাতিকভাবেও বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে দেশে-বিদেশে তাদের কাছেও আমরা সহযোগিতা চাই যে এই ঘটনার যথাযথ সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং যারা এতে দোষী তাদের সাজার ব্যবস্থা হোক। কারণ, আমি জানি এতে আমার কোনো ঘাটতি ছিল না।’

বুধবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৪’–এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কোটা বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ঘটনার তদন্তে আমরা ইতোমধ্যেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। কারণ, দাবির অপেক্ষা আমি রাখিনি। তার আগেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করে দিয়ে দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আগে একজন বিচারপতি দিয়ে তদন্ত কমিটি করে দিয়েছিলাম। এখন আরো দুইজন লোকবল বৃদ্ধি করে তাদের তদন্তের পরিধি আরো বাড়ানোর জন্য তাঁর নির্দেশ প্রদানের কথাও জানান তিনি।

তিনি বলেন, সেইসঙ্গে আমরা জাতিসংঘের কাছেও আবেদন করেছি, আন্তর্জাতিকভাবেও বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে দেশে-বিদেশে তাদের কাছেও আমরা সহযোগিতা চাই যে এই ঘটনার যথাযথ সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং যারা এতে দোষী তাদের সাজার ব্যবস্থা হোক।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা আলোচনায় বসেছিল (আন্দোলনকারি) তাদের সঙ্গে বার বার আলোচনা করেছি এবং তাদের দাবি মেনে নিয়েছি। দাবি মানবো কী যেটা আমিই বাতিল করে দিয়েছি। এটাতো আমারই (কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন) ইস্যু করা। আপিল করা হয় আপিল বিভাগে এবং সেখানে হাইকোর্টের রায় (কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন বাতিল) স্থগিত করে দিয়ে আপিল বিভাগ পূর্ণাঙ্গ শুনানির তারিখ নির্দিষ্ট করে দেয়। কাজেই কোটা না থাকায় আমার জারি করা প্রজ্ঞাপনটাই আবার কার্যকর হয়। পরে আপিল বিভাগে থেকে সেটার রায়ও দিয়ে দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই আন্দোলনের নামে যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে, ধবংসাত্মক কাজ করা হয়েছে তাতে অনেকগুলো তাজা প্রাণ ঝরে গেছে।
তিনি বলেন, জানি না অপরাধটা কী ছিল আমার? যে ইস্যুটা নেই সেটা নিয়ে আন্দোলনের নামে এই ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করে দেশের অর্জনকে নষ্ট করা, আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করাতে কে কী অর্জন করলো সেটাই আমার প্রশ্ন?

সরকার প্রধান বলেন, তাঁর কাছে ক্ষমতা কোন ভোগের বস্তু নয়, তিনিতো আরাম আয়েশ করার জন্য ক্ষমতায় অসেন নি। দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন দেশকে একটু উন্নত করতে। যেটা তিনি সফলভাবে করতে পেরেছিলেন।

‘আজকে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। সেই মর্যাদাকে কেন নষ্ট করা হলো?’ সে প্রশ্ন উত্থাপন করে এর বিচারের ভার তিনি দেশবাসীর কাছে দিয়ে দেন।

’৮১ সালে বাংলাদেশে আসার পর থেকে গুলি, বোমা পুঁতে রেখে গ্রেনেড হামলা করে তার ওপর বহুবার হত্যা প্রচেষ্টার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমিতো জীবনের পরোয়া করিনি। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। দেশকে দারিদ্র মুক্ত করার পাশাপাশি ভূমিহীন-গৃহহীনকে বিনামূল্যে ঘর করে দেওয়া, অন্ন বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থার পাশাপাশি বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করে মানুষের জীবন যাপনকে আরো সহজ করে দেওয়াই তাঁর লক্ষ্য ছিল। কিন্ত যেসব জিনিষগুলো মানুষকে সেবা দেয় সেগুলোই হামলাকারিদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হলো।

শেখ হাসিনা দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘একটা ঘটনা ঘটিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে দেশকে পিছনে টেনে নেওয়ার এই চক্রান্তে যারা জড়িত সেটা আপনাদের খুঁজে বের করা উচিত।’

তিনি বলেন, ঐ ’৭১ এ যারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল তাদের চক্রান্ত বারবার আমাদের দেশকে পিছিয়ে নিয়ে গেছে। এটা হচ্ছে সব থেকে কষ্টের, সবচেয়ে দুঃখের।

জাতির পিতার কন্যা বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলেন, আমি যেহেতু স্বজন হারিয়েছি। স্বজন হারাবার বেদনা আমি বুঝি। তাই যারা আপনজন হারিয়েছেন তাদের প্রতি আমার সহমর্মিতা জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করেছে। স্থাপনা যে ধ্বংস করেছে সেগুলোতো পুনর্গঠন করা যাবে কিন্তু যে প্রাণগুলো ঝরে গেল সেগুলোতো আমরা আর ফিরে পাব না। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ৭টি ক্যাটাগরিতে ২২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে ‘জাতীয় মৎস পদক-২০২৪’ প্রদান করেন। পুরস্কার হিসেবে ৬টি স্বর্ণ, ৮টি রৌপ্য ও ৮টি ব্রোঞ্জ পদক, সম্মাননা স্মারক এবং পুরস্কারের অর্থ প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে জেলেদের মধ্যে স্মার্ট আইডি কার্ডও বিতরন করেন।

২২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি মৎস চাষে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীকেও অনুষ্ঠানে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।

দেশের মৎস খাতের উন্নয়নের ওপর একটি প্রামান্য চিত্র অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়।

মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সংশ্লিস্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার স্বাগত বক্তৃতা করেন।
মৎস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ আলমগীর পুরস্কার প্রদান পর্বটি সঞ্চালনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার সময়ই জাতির পিতা এদেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যেমন কৃষি গবেষণা ও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছিলেন, পাশাপাশি, জনগণের পুষ্টির অধিকারও নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

জাতির পিতার বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বলেছিলেন, ‘মাছ হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারি সম্পদ।’

শেখ হাসিনা বিস্তীর্ণ সামুদ্রিক এলাকার গভীর সমুদ্র থেকে মাছ আহরণে বেসরকারি খাতকে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, গভীর সমুদ্রে মৎস ও সমুদ্র সম্পদ আহরণে যতরকম সুযোগ সুবিধা লাগে তার ব্যবস্থা সরকার করবে। কারণ, এটা আমাদের কাজে লাগবে।
 
পাশাপাশি দেশিও প্রজাতির মাছ যাতে বৃদ্ধি পায় সে গবেষণার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করে বলেন, মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ইলিশ উৎপাদনে প্রথম ও তেলাপিয়া উৎপাদনে ৪র্থ স্থানে রয়েছে এবং সরকারের উদ্যোগ রয়েছে দেশের গ্রামাঞ্চলের পরিত্যক্ত জলাভূমিগুলোকে কাজে লাগিয়ে মৎস উৎপাদন বাড়ানোর। পাশাপাশি, বদ্ধ জলাশয়ে চাষের মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে ৫ বছর বিশ্বে পঞ্চম স্থান ধরে রেখেছে। 
তিনি সংশ্লিষ্ট মহলকে আরো উদ্যোগী হয়ে এই অবস্থানকে আরো এগিয়ে নিয়ে আসার আহ্বান জানান এবং বলেন, মাছ চাষীরা যাতে মাছের ন্যায্যমূল্য পেতে পারে সে পদক্ষেপও সরকার ইতোমধ্যে নিয়েছে।

তিনি মাছ ও মৎসজাত পণ্য রপ্তানিতে ভ্যালু এডেড করার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করে মৎস প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

দেশে তিনটি টেস্টিং ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠাসহ মৎস খাতের উন্নয়নে তাঁর সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, এগুলো শুধু আমাদের দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদাই পূরণ করবে না, জীবন-জীবিকার মানও উন্নত করবে এবং আমরা রপ্তানীর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশকে আরো সামনের দিকে নিয়ে যেতে পারবো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এটুকুই বলবো, বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এই ধারাটা যেন অব্যাহত থাকে। সেজন্য আপনাদের সকলের সহযোগিতা চাই।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]