লেবাননের রাজধানী বৈরুতে হামলা চালিয়ে দেশটির শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর এক সিনিয়র কমান্ডারকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। যদিও হামলার বিষয়ে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ব্রিটিশ এই সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহর এক শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যা করার দাবি করেছে ইসরায়েল।
লেবাননের ইরানপন্থি এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর শক্ত ঘাঁটি দাহিয়েহ শহরে বিস্ফোরণে অন্তত একজন নিহত ও আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, ফুয়াদ শুকর নামের ওই সিনিয়র হিজবুল্লাহ কমান্ডারকে ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নির্মূল’ করার লক্ষ্যে যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা করা হয়। কর্মকর্তারা বলছেন, তিনি গত শনিবার ইসরায়েল-অধিকৃত গোলান মালভূমিতে রকেট হামলার জন্য দায়ী ছিলেন। ওই হামলায় ১২ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই শিশু। যদিও হিজবুল্লাহ ওই হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
এদিকে, লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা করেছেন। তিনি এটিকে ‘অপরাধমূলক কাজ’ হিসাবে উল্লেখ করে এটিকে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার জন্য আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট এবং ব্যাপক লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
হামলার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক সংক্ষিপ্ত পোস্টে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন: ‘হিজবুল্লাহ রেড লাইন অতিক্রম করেছে’। অবশ্য ইসরায়েলি এই হামলায় ফুয়াদ শুকর নিহত হয়েছেন কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়।
বৈরুতের নিরাপত্তা সূত্র বলছে, হিজবুল্লাহর সিনিয়র এই কমান্ডার ভবনটিতে ছিলেন না। হিজবুল্লাহ এখনও এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেয়নি।
একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজকে নিশ্চিত করেছেন, ইসরায়েল তার বৈরুত হামলার বিষয়টি আগেই যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে। ফুয়াদ শুকরকে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহর সিনিয়র উপদেষ্টা বলে মনে করা হয়ে থাকে বলে যুক্তরাষ্ট্র আগে বলেছিল।
এছাড়া ফুয়াদ শুকরের বিষয়ে যেকোনও তথ্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ৫০ লাখ মার্কিন ডলার পুরস্কারও ঘোষণা করে রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, তিনি ১৯৮৩ সালে বৈরুতে মার্কিন মেরিন ব্যারাকে বোমা হামলায় ‘মূল ভূমিকা’ পালন করেছিলেন। সেই হামলায় ২৪১ মার্কিন সামরিক সদস্য নিহত হয়েছিল।
এদিকে ইসরায়েলি হামলার পর হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যঁ-পিয়েরে সাংবাদিকদের বলেন, ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে বৃহত্তর যুদ্ধ এড়ানো যেতে পারে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বিশ্বাস করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উত্তেজনার কোনও বৃদ্ধি দেখতে চাই না, আমরা সর্বাত্মক যুদ্ধও দেখতে চাই না।’