স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামী এবং দলটির ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে আইনি দিক দেখার কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘জামায়াত নিষিদ্ধের জন্য আইনি বিষয়টি ভালোভাবে দেখে সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ শীঘ্রই নেবে; যাতে কোনো ফাকফোকর দিয়ে এই অপশক্তি স্বাধীন বাংলাদেশে আর কোনো সুযোগ না পায়।’
মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের যৌথসভার শুরুতে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতের রাজনীতি বাংলাদেশে নিষিদ্ধের দাবি দীর্ঘদিনের। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নেওয়ার পর এই দাবি আরো জোরালো হয়। তবে গত ১৫ বছরে কার্যকর কোনো উদ্যোগ সরকারের তরফে নেওয়া হয়নি।
এবার কোটাবিরোধী আন্দোলনকে সহিংস রূপ দেওয়ার পেছনে বিএনপি ও জামায়াতকে দায়ী করে আসছেন ক্ষমতাসীনরা। তার মধ্যেই সোমবার সন্ধ্যায় ১৪ দলের বৈঠকে জামায়াত ও শিবিরকে নিষিদ্ধের সিন্ধান্ত নেওয়া হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৪ দলের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনেক দিন থেকেই সে দাবি করে আসছিল অনেকে। জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, পরবর্তীতে গণজাগরণ মঞ্চ থেকেও এই দাবি জানানো হয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালতের রায়েও জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়।’
সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী নিবন্ধনবিহীন কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর হিটলারের নাৎসি পার্টি জার্মানিতে রাজনীতি করতে পারে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে জামায়াত যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে রায় আছে।’
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে সরকারি উদ্যোগে দেশজুড়ে শোক পালন নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকের দিনটি ঠিক রাষ্ট্রীয় শোক দিবস নয়, এটা সরকারিভাবে শোক পালন; জাতীয় বা রাষ্ট্রীয় নয়।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘১৫ অগাস্টে যারা শহীদ হয়েছে, তাদের স্মরণে এই শোকের মাস যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালন করে থাকি। এর আগেই গত ওয়ার্কিং কমিটির সভায় জাতীয় শোক দিবসে ও শোকের মাসে আমাদের কর্মসূচি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমাদের মহানগর ও সহযোগী সংগঠন নিজেদের মাঝে সভা করে কর্মসূচি নির্ধারণ করেছে।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।