কোটা সংস্কারের দাবীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ঘোষিত শাটডাউন কর্মসূচির নামে সারাদেশের মতো কক্সবাজারেও ঘটেছে সহিংসতার ঘটনা।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিকেলে শহরের প্রবেশদ্বার লিংকরোডে জড়ো হয় আন্দোলনকারীরা, যাদের বেশিরভাগই ছিলো বিএনপি- জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ছাত্রদল ও শিবিরের কর্মী।
ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্তের পর যাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে মামলা, আইনের আওতায় আনতে অব্যাহত আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী'র সাঁড়াশি অভিযান।
পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ব্যাপক নাশকতার উদ্দেশ্যে আন্দোলন চলাকালীন উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়েছিলো রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের।
জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর ও কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট শাহজালাল চৌধুরী'র নির্দেশে দশটি মিনিট্রাক (ডাম্পার) যোগে কমপক্ষে দুই শতাধিক অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে ১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকেলে নিয়ে যাওয়া হয় কক্সবাজার শহরে।
উখিয়া সদরের নিকটবর্তী রাজাপালংয়ের মধুরছড়া গ্রাম'স্থ চার নং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কৌশলে বেরিয়ে আসার পর পার্শ্ববর্তী ৩নং ওয়ার্ডের দৌছড়ি গ্রামে জড়ো হয় রোহিঙ্গারা,সেখান থেকে দশটি মিনিট্রাকে যোগে তারা ৩০ কিলোমিটার দূরে আন্দোলনের স্থল লিংকরোডে পৌঁছায়।
মাথাপিছু ১০০০ টাকা চুক্তিতে কথিত সশস্ত্র সংগঠন আরকান সালভেশন রোহিঙ্গা আর্মি (আরসা)'র চার নং ক্যাম্পের কমান্ডার মোহাম্মদ ইদ্রিসের কাছ থেকে এসব রোহিঙ্গাদের ভাড়া করেন শাহজালাল চৌধুরী'র বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিত ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছৈয়দ হামজা।
শাহজালাল চৌধুরী'র নির্দেশনা অনুযায়ী হামজা নিজেই এসব রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার নিয়ে যাওয়া-আসা সহ নাশকতার ঘটাতে আদেশ প্রদান করেন বলে জানা গেছে।
লিংকরোড পৌঁছানোর পর আন্দোলনকারীদের সাথে মিশে গিয়ে একটি মিছিল শহরে প্রবেশ করলে পেট্রোলপাম্প-লালদিঘীর পাড় এলাকায় ভাঙ্গচুর,গুলিবর্ষণ করে রোহিঙ্গা নাশকতাকারীরা।
নাম প্রকাশ করার শর্তে আন্দোলনে অংশ নেওয়া তিন নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক রোহিঙ্গা যুবক জানান, " টাকা দিবে শুনে এক বন্ধুর কথায় কক্সবাজার গিয়েছিলাম, পরে সেখানে ঘটনা হলে পালিয়ে আসি। আমাদের সাথে যাওয়া অনেকের কাছে অস্ত্র ছিলো।"
সংঘটিত সহিংসতার ঘটনাগুলোতে এ পর্যন্ত ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম।
এসব মামলায় ৩২৩ জনের নাম উল্লেখসহ সহস্রাধিক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, " সহিংসতার ঘটনা গুলো বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলছে, এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ৭২ জন। "
২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে উখিয়ার বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এডভোকেট শাহজালাল চৌধুরী'র বিরদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করা হয়।
নাশকতায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ব্যবহার প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে এডভোকেট শাহজালাল চৌধুরী ও ছৈয়দ হামজার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও কল রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।