সব গ্রেডে ‘অযৌক্তিক কোটা বাতিল’ করে ন্যূনতম কোটা রাখা দাবিতে বুধবার সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ চলবে বলে জানিয়েছেন কোটা আন্দোলনের নেতারা। এদিন সড়কের পাশাপাশি রেলপথেও থাকার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।
মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে কোটা আন্দোলনের সমন্বয় নাহিদ ইসলাম এই ঘোষণা দেন।
এদিকে দাবি আদায়ে রাজধানীসহ সারাদেশে সড়ক, রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলন করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এতে তীব্র যানজট ও ভোগান্তিতে নাকাল হয়ে পড়েছে গোটা দেশ।
নাহিদ বলেন, জনগণসহ যে ভোগান্তি হচ্ছে তার দায় সরকারকে নিতে হবে। সংসদে আইন পাশ করার মাধ্যমে কোটা সংস্কার করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার চাইলেই পরিপত্র জারি করতে পারে।
অপরদিকে, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলে পক্ষভুক্ত হওয়ার জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, আদালতের সঙ্গে আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। যারা আদালতে রিট করেছে তাদের রিটকে সমর্থন করি। তবে এর সঙ্গে আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। দাবি নিয়ে যে কেউ আবেদন করতে পারে।
সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই রায়ের বিরুদ্ধে বুধবার আপিল বিভাগে শুনানি হবে।
নাহিদ বলেন, বুধবার যে শুনানি আছে তাতে যদি ইতিবাচক কোনো সমাধান আসে তাহলে কোনো কথা নেই। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর না হলে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্বশীল কোথাও থেকে আলোচনার কথা বলা হলে সেটি বিবেচনা করা যেতো।
সব মিলিয়ে পাঁচ শতাংশ কোটা রাখা দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারে পক্ষ থেকে যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো সমাধান না আসবে, ততোক্ষন পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তবে হরতালের মতো কোনো কর্মসূচিতে আমরা যেতে চাই না।
কোটা আন্দোলনের আরেক নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, এটা কোটা বাতিলের আন্দোলন নয়, বাস্তবতার সঙ্গে সমন্বয় করে যৌক্তিক সংস্কারের দাবি।
তিনি বলেন, এই আন্দোলন মুক্তিযোদ্ধার কোটার বিরোধীতা নয়। যারা দেশকে স্বাধীন করেছে তাদের সম্মান নিয়ে কখনও প্রশ্ন তোলা হয়নি।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিদের যে কোটা রয়েছে তার বিরোধীতা করা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা নিয়ে কোনো অসম্মান করা হচ্ছে না। যারা এটি নিয়ে অপপ্রচার করছে তাদের দেশ বিরোধী হিসাবে চিহৃিত করছে আন্দোলন কারীরা।
কোটা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য থাকতে পারে। তবে তা কত শতাংশ থাকতে পারে তা হতে পারে মাত্র পাঁচ শতাংশ।
ভোরের পাতা আরএস