মাগুরার শালিখায় আপেল, আঙ্গুর, বেদেনা, কমলালেবু, খাজুরসহ নানাবিধ বিদেশি ফলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পেয়ারা, আম, কাঠাল, জাম, লিচু, সবেদা, পেঁপে, বাতাবি লেবুসহ নানাবিধ দেশি ফলের দাম। দেশি ফলের উৎপাদন হ্রাস, উৎপাদনের তুলনায় চাহিদা বেশি, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম এবং বাজার তদারকির অভাব হেতু এমনটা হচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। ভরা মৌসুমেও দেশি ফল চড়া দামে বিক্রি হওয়ায় তা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।
সরেজমিন উপজেলা সদর আড়পাড়া বাজারের বিভিন্ন ফলের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বিদেশি ফলের পাশাপাশি নানা ধরনের দেশি ফলের পসরা সাজিয়ে বিক্রি করছেন ফল বিক্রেতারা। যেখানে প্রতি কেজি আপেল বিক্রি হচ্ছে ২০০-৩০০টাকা, বেদেনা- ২৮০-৩৬০ টাকা, আঙ্গুর- ৩০০ টাকা, মালটা ও কমলালেবু- ২৮০-৩০০ টাকা সেখানে দেশি ফল পেয়ারা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, জাম-২০০ টাকা, আম-১০০-৩০০ টাকা, লিচু প্রতি বান্ডল-১৬০ টাকা, সবেদা-প্রতি পিচ-১৫-২০ টাকা। চাহিদা থাকায় বাগানের আঁটিসার আঁশফলও বিক্রি হচ্ছে বান্ডল প্রতি ৬০-৭০ টাকা। দেশি ফলের মধ্যে তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে জাম। জাম গাছ কমে যাওয়ায় অপরিপক্ক লালচে জামও বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৫০ টাকা। এছাড়াও একটি পাকা বেল-৭০, পাকা পেঁপে-১০০-১৫০ টাকা, বাতাবি লেবু-৬০-৭০ টাকা, কাঠাল- ১০০-২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।দেশি ফলের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও সুবিধা পাচ্ছেন না উৎপাদকরা।
সুবিধার ঝোলা এখন মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে। রোস্তম কাজী, রুমান মীরসহ একাধিক বিক্রেতার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এবছর আম, জাম, লিচু ও পেঁপের উৎপাদন ভালো না হওয়ায় এবং বিদেশি ফলের তুলনায় বেশি ফলের চাহিদা বেশি থাকায় দেশি ফলের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর একটু চড়া।
এছাড়াও উৎপাকের কাছ থেকে বাজার অবধি আনতে খরচ বেশি পড়ছে তাই বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। অপরদিকে ইমরান, সাইফুল ইসলাম, চঞ্চল মাহমুদসহ কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, কয়েক বছর আগেও দেশি ফল বিক্রি হতো বিদেশি ফলের এক-তৃতীয়াংশ মূল্যে। এখন যা অর্ধেকেরও বেশি। কোনোটি আবার কাছাকাছি মূল্য প্রায়। দিনে দিনে দেশি ফলের এমন মূল্য বৃদ্ধি পেলে ভিটামিনের ঘাটতির পাশাপাশি ফর্মালিনযুক্ত বিদেশি ফলের কদর বেড়ে যাবে বলেও মনে করছেন তারা। পাশাপাশি হাত বদলালেই ফলের দাম বৃদ্ধি এটি সকলের জন্য অশনিসংকেত বলে মনে করছেন অনেকে। তাই দেশি ফলের উৎপাদন বৃদ্ধি, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম রোধ ও বাজার দর নির্ধারণ পূর্বক তদারকির জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সুশীল সমাজ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলমগীর হোসেন বলেন, দেশি ফলের কদর বাড়ছে এটি আমাদের জন্য এক প্রকার সুখবর তবে উৎপাদনের তুলনায় দেশি ফলের প্রতি মানুষের চাহিদা বৃদ্ধি ও মধ্যস্বত্বভোগীরা সুবিধা লুটে নেওয়ার ফলে দেশি ফলের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।