প্রকাশ: সোমবার, ১০ জুন, ২০২৪, ৮:৪৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
'মোরা অসহায় মোদের কেউ খোঁজ খবর রাখে না'- আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেন দিনমজুর ফুয়াদ হোসেন ও তার পরিবার।পিরোজপুরের কাউখালীতে এক অসহায় দিনমজুর পরিবার পলিথিন দিয়ে ঘর তৈরি করে বসবাস করছে।
উপজেলার শিয়ালকাঠি ইউনিয়নের দক্ষিণ শিয়ালকাটি গ্রামের ডরের বাড়ির সিকান্দার হাওলাদারের দিনমজুর ছেলে ফুয়াদ হোসেন (৫০) ছোট্ট ঘরটি ঘূর্ণিঝড় রিমালে গাছ পড়ে সম্পূর্ণ ঘরটি বিধস্ত হয়ে পড়েছে। এখন থাকার মত তাদের কোন স্থান নেই। কোন মতে একটি ছোট ঘর তৈরি করে স্ত্রী ও সাত সন্তান নিয়ে কোনমতে দিন যাপন করতেন এই দিনমজুর ফুয়াদ হোসেন। ভাগ্যের পরিহাসে ঘূর্ণিঝড়ে তার থাকার শেষ আশ্রয়টুকু ঘরটিও ভেঙ্গেচুরে চুরমার হয়ে গেছে। কোনমতে অর্ধ হারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে এই দিনমজুর পরিবারটি।
অসহায় ফুয়াদ হোসেন বলেন, আমার সংসারে স্ত্রী ও সাত ছেলে মেয়ে রয়েছে। দুই মেয়ে স্থানীয় জোলাগাতি ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ষষ্ঠ ও পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে, দুই ছেলে স্থানীয় ফলোইবুনিয়া নূরানী মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া খরচ চালাতে আমাকে খুব হিমশিম খেতে হচ্ছে। মানুষের বাড়িতে যেদিন কাজ করতে পারি সেদিন সংসারে কোনমতে খাবার খেতে পারি। কাজ না করলে ঘরের চুলা বন্ধ থাকে। এই অভাবের সংসারে কিভাবে ঘর মেরামত করে বসবাস করব। আমার মাত্র ৬ শতাংশ জায়গা রয়েছে, সরকার যদি ঘর তৈরি করে দিত তাহলে ছেলেমেয়ে নিয়ে নিরাপদে থাকতে পারতাম। তাই কোন সহযোগিতা না পেয়ে মানুষের কাছে চেয়ে পলিথিন দিয়ে ঘর তৈরি করে ঝুঁকির ভিতরে বসবাস করছি।
দিনমজুর ফুয়াদ হোসেন ও তার স্ত্রী মানসুরা বেগম আক্ষেপ করে বলেন, মোরা অসহায় মোদের কেউ খোঁজ খবর রাখে না, সবাই খোঁজ খবর রাখে বড়লোকদের। ঘূর্ণিঝড়ে মাত্র ১০ কেজি চাল, এক কেজি ডাল, ২ কেজি আলু ও এক কেজি তেল পাইছি।
স্থানীয় মুরুব্বী ফজলুর শিকদার ও বাবুল হাওলাদার বলেন, এই অসহায় পরিবারটি খুবই কষ্টের ভিতর দিন যাপন করছে। স্থানীয় মেম্বার রনি জানান, আমি ক্ষতিগ্রস্ত ফুয়াদ হোসেনের বাড়িতে গিয়েছি এবং বাস্তবে অসহায় পরিবারটির ঘর উঠাবার কোন তৌফিক নেই।
এ ব্যাপারে শিয়ালকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে ওই পরিবারটির খোঁজখবর নিয়েছি এবং ঘরের তালিকা তৈরি করেছি যতদূর সম্ভব সহযোগিতা করব।