চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে হতদরিদ্র নারীদের জীবনমান উন্নয়নে প্রশিক্ষন প্রাপ্ত ২৭ নারীকে দেয়া হয় সেলাই মেশিন। আনুষ্ঠানিক ভাবে উপজেলা পরিষদ থেকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর আওতায় এ মেশিন গুলো বিতরন করা হয়।
তবে সম্প্রতি উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান শাহনাজ খাতুন অভিযোগ তুলেন, আনুষ্ঠানিকতা করা হলেও বিতরন করা হয়নি সেলাই মেশিন। এ নিয়ে তিনি এলজিইডি চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও বিভাগীয় কার্যালয়ে অভিযোগও জমা দেন।
তবে উপকারভোগী বেশ কয়েকজন উপজেলা পরিষদ থেকে পাওয়া সেলাই মেশিন চালিয়ে এখন তারা বাড়তি আয় করছেন। সংসারেও এসেছে স্বচ্ছলতা। উপজেলার বাহাদুরগঞ্জ গ্রামের মাসুদ রানার স্ত্রী মৌসুমী খাতুন জানান, তিনি উপজেলা পরিষদ থেকে সেলাই মেশিন পেয়েছেন। এরপর তিনি নিয়মিতই কাজ করছেন, কিছু আয়ও হচ্ছে তার।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান রাব্বুল হোসেনসহ উপজেলার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তারা জানান, উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান তার পছন্দের কয়েকজনকে সেলাই মেশিন দিতে না পারায়, এমন অভিযোগ তুলেছেন।
উপজেলার এক দ্বায়িত্বশীল কর্মকর্তা অনেকটা বিরক্ত হয়েই বললেন, মেশিন বিতরনের এতো দিন পর, মেশিন না পাওয়ার অভিযোগ তোলা কতটা যোক্তিক। যারা বলছেন তারা মেশিন পাননি তারা কি ভিত্তিতে বলছেন। আসলে অনেকেরই নাম নেয়া হয়, এরপর ধারাবাহিকভাবে দেয়া হয়। এবার ২৭ জনকে দেয়া হয়েছে, আবারও অন্যদের দেয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাব্বুল হোসেন জানান, উপজেলা পরিষদে আনুষ্ঠানিক ভাবেই সেলাই মেশিন গুলো বিতরন করা হয়েছে। উপকার ভোগী নির্বাচনে সর্বচ্চো স্বচ্ছতাও নিশ্চিত করা হয়েছে। আর সবচেয়ে বড় বিষয় হলো এ প্রজেক্টই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানই নিজে স্বমন্বয় করেছেন, তার মাধ্যমেই তো সেলাই মিশন গুলো বিতরন করা হয়েছে। এতোদিন পর তিনি কেন এমন অভিযোগ তুলছেন আমার বোধগম্য হচ্ছে না।
এ বিষয়ে এলজিইডি ভোলাহাটের প্রকৌশলী আছহাবুর রহমান জানান, উপজেলা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সেলাই মেশিন দেয়া হয়। বাকি মেশিন গুলো উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিজেই বিতরন করেছেন। এখন তিনি কেন এসব অভিযোগ করছেন। যাদের দিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে, তারা সবাই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের আত্বীয় স্বজন ও পরিচিত জন।
তবে যার করা অভিযোগ নিয়ে এতো কথা, সেই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহনাজ খাতুনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা আক্তার জানান, আমি সম্প্রতি যোগদান করেছি, বিষয়টি আমি শুনেছি, খোঁজখবর করে দেখব। তবে এমন হওয়ার কথা নয়। কোন কিছু বিতরনের পর কেন ফেরত নেয়া হবে। তারপরও আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোজাহার আলী প্রাং জানান, ভোলাহাটে সেলাই মেশিন বিতরনের বিষয় নিয়ে একটা অভিযোগ আমার দপ্তরে এসেছে। আমি উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি, তিনি আমাকে জানিয়েছেন সেলাই মেশিন গুলো উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান সহ অনান্যদের উপস্থিতিতেই বিতরন করা হয়েছে। এরপরও আমি সবকিছুই খোঁজ খবর করছি, তদন্ত শেষ হলে আপনাদেরও বিষয়টি জানাব।