চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচার প্রচারনার শেষ মহূর্তে দুটি ইউনিয়নে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তুলেছেন নির্বাচনে কাপ-পিরিচ প্রতিকের প্রার্থী সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। তাদের অভিযোগ নির্বাচনটি নিরপেক্ষ করতে যেন পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়।
আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন, নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী চার জন হলেও মূল প্রতিদ্বন্দিতা হবে, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মহসীন আলীর সংঙ্গে।
গেল দুই দিন নির্বাচনী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রকাশ্যে মহসীন ্আলীর পক্ষে সংসদ সদস্যদেও ঘনিষ্টজনরা প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছেন। শিবগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ মহসীন আলীর পক্ষে নিজেদের নেতাকর্মীদেরও প্রচারনায় নামিয়েছেন উল্লেখ করে বলেন নির্বাচনে দুইজন সংসদ সদস্যে এক প্রার্থীর পক্ষে অবস্থায় নেওয়ায় নির্বাচনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করেছেন কাপ-পিরিচ প্রতিকের প্রার্থী সৈয়দ নজরুল ইসলাম। তবে স্থানীয় সাংসদ ডাঃ সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল একসপ্তাহ আগে বিদেশে গেছেন।
শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু আহমেদ নাজমুল কবির মুক্তা জানান, নির্বাচনের শুরু থেকেই নয়ালাভাঙ্গা ও ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়নে আমাদের কাপ-পিরিচের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার প্রচারনায় বাঁধা দিচ্ছে। আমরা আশঙ্খা করছি ভোটে কারচুপি হতে পারে।
শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম টুটুল খান অভিযোগ করেন নির্বাচনে মোটর সাইকেল প্রতিকের প্রার্থী আলহাজ¦ মহসীন আলী ও সদর আসনের সংসদ আব্দুল ওদুদের ভাইরা মোস্তাকুল ইসলাম পিটু মিয়া প্রথম থেকেই নয়ালাভাঙ্গা ও ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়নে আমাদের কাপ-পিরিচের প্রতিকের প্রচার প্রচারনায় ঝামেলা করে আসছিলেন। তিনি এ দুই ইউনিয়নের আমাদের কর্মীদের একরকম প্রচার প্রচারনা চালাতেই দেননি।
কাপ-পিরিচের পক্ষে কাজ করায় নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম সহ বেশ কয়েকজন বাড়িতে ককটেল হামলা করেছে, সালামের গাড়িতেও ককটেল হামলা কওে ভয়ভীতি দেখায়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলেও পুলিশ আসামী ধরেনি। এসব কারনে আমরা শঙ্কিত যে ভোটের দিন, তারা জোর করে ব্যালটে শীল দিয়ে নিজেদের পক্ষে ফলাফল নিযে যেতে পারেন।
সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও কাপ-পিরিচ প্রতিকের প্রার্থী সৈয়দ নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে যেখানে দল থেকে সংসদ সদস্যদের কোন প্রার্থীর পক্ষে না যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিলো, তারপর আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জের এমপি সাহেব ফোন করে আমার কর্মীদের হুমকি ধামকি দিয়ে, অন্য প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছন। বিশেষ করে নয়ালাভাঙ্গা ও ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়নের নেতৃ স্থানীয় অন্তত ১৫জনকে হুমকি ধামকি দিয়েছেন। এমনকি আমার কর্মী, নয়ালাভাঙা ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার ফিজোরের বাড়িতে পরপর দুদিন ককটেল হামলা করা হলেও পুলিশ কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। প্রচার প্রচারনায় শেষ মহূর্তে এসে এমন পরিবেশ দেখে আমি এখন আশঙ্কা করিছি যে, নির্বাচনের দিনও এই পক্ষটি গোলজোগ করে নিজেদের পক্ষে ফলাফল ছিনিয়ে নিবে। আমি বিষয়গুলো নিয়ে রির্টানিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিব।
নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগের বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ বলেন, আমি শিবগঞ্জের কোন নির্বাচনী এলাকায় যায়নি। কাউকে কারো পক্ষে কিংবা বিপক্ষে কাজ করতেও বলেনি। তবে আমার মনের ভাষা বুঝে যদি কোন কর্মী নির্বাচনে কাজ করে তাহলে তো আমি খুশি হব।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন জানান, বেশ কিছু স্থানে ককটেল বিস্ফোরনের অভিযোগ পেয়েছি, আমরা বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখছি। দোষীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ বলেন ঐ দুটি ইউনিয়নে নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে শতভাগ ব্যাবস্থা নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা আহমেদ মাহবুব---উল ইসলাম বলেন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে কোন ছাড় দেয়া হবেনা।