শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

শিরোনাম: চার বিভাগে নতুন করে ৪৮ ঘণ্টার জন্য হিট অ্যালার্ট জারি     গত ৪৪ বছরে সবচেয়ে সাহসী রাজনীতিকের নাম শেখ হাসিনা : ওবায়দুল কাদের    নতুন যুগের প্রতিশ্রুতি দিলেন পুতিন-শি জিনপিং    জনগণের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য দল আওয়ামী লীগ : শেখ হাসিনা    ভোটকেন্দ্রের কাস্টিং ভোটের তথ্য ২ ঘণ্টা পরপর পাঠানোর নির্দেশ     ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান    সরকার বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে : মঈন খান   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
মোংলায় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে শিক্ষা অধিদপ্তর
মোংলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ২:২২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

মোংলায় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের আলোচিত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পুষ্পজিৎ মন্ডলের বিরুদ্ধে দুর্নিতীর তদন্ত শুরু করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। শনিবার (২৭ এপ্রিল) কাউকে না জানিয়ে মোংলা উপজেলার অয়েস্থায়ী কার্যালয়ে প্রায় ২৫ জন শিক্ষকের কাছ থেকে রিখিত সাক্ষ্য গ্রহন করেণ ঢাকার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মোঃ শাহিন মিয়া। পরে অভিযুক্ত ওই শিক্ষা কর্মকর্তারও সাক্ষ্য নেয়া হয়। তবে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে অভিযোগকারী শিক্ষকদের বিভিন্ন ভয় দেখিয়ে হুমকি দিচ্ছে অন্য সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা গুরুদাশ বিশ্বাস বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। সত্য উধঘাটনে স্বজনপ্রতি আর দুর্নিতী বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েও বিপাকে পরছে সাধারন শিক্ষকরা।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, পুষ্পজিৎ মন্ডল ২০১৬ সালে ৩ জুলাই মোংলা উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেণ। প্রথম থেকে ২ বছর ভালভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি নজর থাকলেও পরে জড়িয়ে পরে বিভিন্ন দুর্নিতী আর অনিয়মের সাথে। তার বিরুদ্ধে এমন বেশকিছু অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ৭১টি স্কুলের অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে প্রধান কার্যালয়ের সচিব সহ সরকারের উর্ধতন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।

গত ১০ ডিসেম্বর করা এই অভিযোগে বলা হয়, মোংলা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পুস্পজিৎ মন্ডল যোগদানের কিছু দিন পর থেকেই জড়িয়ে পরে বিভিন্ন অনিয়োম আর দুনির্তীতে। তিনি অফিসে কাজের বিনিময়ে অন্যান্য শিক্ষকের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ, ক্ষমতার অপব্যবহার, অফিস ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমন, অবৈধভাবে বদলী বানিজ্য, মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে শিক্ষকদের দুরের স্কুল থেকে কাছে আনা, আবার কেউ তার বিরোধীতা করলে তাকে কাছের স্কুল থেকে সড়িয়ে অনেক দুরের স্কুলে বদলী করা,স্বজন প্রিতি, কাছের শিক্ষকদের সরকারী বিভিন্ন প্রেগ্রামের সুযোগ করে দেয়া, টাকার বিনিময় মাসের পর মাস বিদ্যালয় উপস্থিত না হয়েও বেতন-বাতাধি পাইয়ে দেয়া, শিক্ষকদের সাথে অশ্লালীন আচরণ, মাসিক সমন্নয়সভায় জনসম্মুখে শিক্ষকদের শাস্তি দেয়া সহ বহু অভিযো ওই সহকারী শিক্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। যা সরকারি নিয়ম পরিপন্থি কাজের সামিল। সর্বোপরি ২০১৯-২০, ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থ বছরের ৭১টি স্কুলে সরকারের বরাদ্ধ দেয়া প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার দুর্নিতীর অভিযোগ উঠে শিক্ষা ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। সেখানে পুস্পজিৎ মন্ডল ও গুরুদাস বিশ্বাস কৌশলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ফাসিঁয়ে দিয়ে নিজেরা সরে পরে। যা নিয়ে বেশ কয়েকবার তদন্ত হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রনালয় সহ বিভিন্ন দপ্তর। সরকারী বরাদ্ধের প্রায় সাড়ে  ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের ব্যাপারে দুদকে মামলাও চলমান রয়েছে।
যার ফলে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পুস্পজিৎ মন্ডলের দুনির্তীর দায় গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর মোংলা থেকে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে বদলী করা হয়। ২ অক্টোবর মোংলা শিক্ষা অফিস থেকে বিদায় নেন পুস্পজিৎ মন্ডল। কিন্ত সেখানে যোগদান করে মাত্র ১৭ দিনের মাথায় অদৃশ্য ক্ষমতা বলে ১৯ অক্টোবর বদলী বাতিল করে পুনরায় মোংলা শিক্ষা অফিসে যোগদান করেন তিনি।

তাই অভিযোগের এ সকল বিষয়টি আমলে নিয়ে চলতি বছরের মার্চ মাসে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। পরে ২৭ এপ্রিল অভিযোগ দাখিলকারীদের প্রায় ২৫জন শিক্ষকের সাক্ষ্য নেন তদন্ত কমিটির প্রধান ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মোঃ শাহিন মিয়া সহ তদন্ত কমিটির প্রতিনিধিরা।

মোংলা বাশতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেব কুমার মন্ডল বলেন, ওই সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম করেই যাচ্ছে। এজন্যই আমাদের ৭১টি স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষকের এই প্রতিবাদ। আমরা চাই, মোংলা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় দুর্নীতিমুক্ত থাকুক। শিক্ষার্থীরা তাদের আগামীর জীবন গড়তে শিক্ষকরা যেন বিদ্যালয় মনোনিবেশ করে। আমরা কোনো অনিয়ম চাই না।

পশ্চিম বাজিকরের খন্ড স্কুলের আরেক প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, মোংলা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পুস্পজিৎ মন্ডল আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে। বিষয়টি আমি তদন্ত কমিটির কাছে লিখিত দিয়েছি। পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি ব্যবস্থা নিবে বলে আশা করি। কিন্ত উল্টো অন্য সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আমাদের হুমকি দিচ্ছে।



ঢাকা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ শাহিন মিয়া বলেন, মোংলা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষকদের পক্ষ থেকে শিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগ দেয়ায়, সে জন্য অধিদপ্তর তদন্ত কমিটি গ্রহন করেছে। সেই সুত্রধরে মোংলায় সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পুস্পজিৎ মন্ডলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। শেষে এর প্রতিবেদন শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যলয় দাখিল করা হবে। অভিযোগের সদস্যতা প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিবে মন্ত্রনালয়। সংবাদকর্মীদের বহু প্রশ্ন থাকলেও তদন্তের স্বার্থে অন্য কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি কমিটি প্রধান মোঃ শাহিন মিয়া।

সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা গুরুদাস বিশ্বাস বলেন, আমি কাউকে হুমকি দেই নাই তবে শিক্ষক হয়ে শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোদ দেয়াটা সঠিক হয়নী বলেছি মাত্র।  

এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত মোংলা উপজেলায় ৮ বছর যাবত ক্ষমতাবলে বহাল থাকা সহকারী শিক্ষা অফিসার পুস্পজিৎ মন্ডল বলেন, বেনামে কয়েকজন শিক্ষক আমার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তরে, যার কোনো ভিত্তিই নেই। যেহেতু তদন্ত হচ্ছে, আমি ভাল করেছি নাকি খারাপ করেছি প্রতিবেদন পাওয়া গেলে পরবর্তীতে বিষয়টি বোঝা যাবে।

মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না বলেন, এমন অভিযোগের বিষয়টি অবগত থাকলেও সরাসরি মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদফতর বিষয়টি তদারকি করছে। সেখান থেকেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমাদের কাছে কোনো তথ্য চাইলে যেটা সরবরাহ করা হবে। মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে, তবে এখনও এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনকে কোনো চিঠি দেয়া হয়নি।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]