প্রকাশ: সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৩, ৯:৫৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
হাটহাজারীতে শনিবার দিবাগত রাত থেকে শুরু হওয়া প্রবল বর্ষনের ফলে এক বন্যার রেশ না কাটতেই আবারো বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে জনদূর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
বর্ষনের ফলে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রাম - হাটহাজারী মহাসড়কের ইসলামীরহাট থেকে নন্দীরহাট পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার সড়ক পানির নীচে তলিয়ে যায়। মহাসড়কের বড়দীঘির পাড় এলাকাও ঢলের পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে মহাসড়ক দিয়ে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, নাজিরহাট, ফটিকছড়ি, রাউজান ও রাঙ্গামাটি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তাছাড়া গত রবিবার নাজিরহাট থেকে চট্টগ্রাম গামী ট্রেনটি পাহাড়ি ঢলের কারণে ফতেয়াবাদ এলাকায় গিয়ে আটকা পড়েছে বলে ট্রেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির নেতা শওকত আলম জানান।
অপরিকল্পিত ভাবে বসতঘর নির্মান, পাহাড়ি ঢলের পানি নিস্কাষনের খাল ছড়া অবৈধ দখলের ফলে ঢলের পানি আটকে গিয়ে রোববার সকাল সাড়ে আটটা থেকে এই মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গত রবিবার ছিল এইচ এস সি পরীক্ষার ১ম দিন। মহাসড়ক ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এইচ এস সি পরীক্ষার্থী ও কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কেন্দ্রে যেতে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। যেসব পরীক্ষার্থীর অভিভাবক সিএনজি টেক্সি নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাচ্ছিল তারা পাহাড়ি ঢলে মহাসড়ক পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে ভোগান্তির শিকার হয়েছে। বড় গাড়ি বিশেষ করে বাস ট্রাক এই মহাসড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলে ও ছোট গাড়ি চলাচল করতে পারেনি। তাই পরীক্ষার্থীর অভিভাবকের রিকশা ভেনে করে মহাসড়ক পার হয়েছে।
এদিকে প্রবল বর্ষনের ফলে হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের পশ্চিম উদালিয়া ওয়ার্ডের সোনাইরকূলের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার মনাই ত্রিপুরা পল্লীর জয়তী ত্রিপুরা, সমরায় ত্রিপুরা ও সুফল ত্রিপুরাসহ তিন পরিবারের বসত ঘর ধসে পড়ায় ওই তিন পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
খবর পেয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বি এম মসিউজ্জামান ও ওসি মোঃ মনিরুজ্জামান ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়া মহাসড়ক এলাকায় ছুটে গিয়ে পরীক্ষার্থী ও কেন্দ্রে দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্হা করেন। এরপর ও ফতেয়াবাদ সিটি করপোরেশন ডিগ্রি কলেজের পরীক্ষার্থীরা যথাসময়ে কেন্দ্রে পৌঁছাতে না পারায় এই কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক ঘন্টা পর পরীক্ষা শুরু করা হয়। ফতেয়াবাদ সিটি করপোরেশন ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক শিমুল কান্তি মহাজন মহাসড়ক পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে গাড়ি চলাচল করতে না পাড়ায় তিনি তাঁর সন্তানকে নিয়ে বিলম্বে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছেন বলে জানান। এই কেন্দ্রে ১ ঘন্টা ১০ মিনিট পর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে পরীক্ষা শুরু করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ফতেয়াবাদ এলাকার সমাজকর্মী রুপেশ শীল জানান, ফতেয়াবাদ এলাকার মরা ছড়ার পাহাড়ি ঢল স্হানীয় দুলাল ডাক্তারের বাড়ি এলাকার শতাধিক বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে গেছে। রান্না ঘরে ঢলের পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে জনদূর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম মসিউজ্জামান জানান প্রবল বর্ষনের ফলে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রাম - হাটহাজারী মহাসড়কের ইসলামীয়ারহাট থেকে নন্দীরহাট এলাকা ঢলের পানিতে তলিয়ে যায়। এতে করে গতকালের এইচ এস সি পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কেন্দ্রে পৌঁছাতে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা যথাসময়ে কেন্দ্রে পৌঁছাতে না পারায় ফতেয়াবাদ সিটি করপোরেশন ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ের পরীক্ষা প্রায় ঘন্টা খানেক পরে শুরু করা হয়।
এদিকে উপজেলার ফরহাদাবাদ মনাই ত্রিপুরা পল্লীতে তিন পরিবারের বসত ঘর প্রবল বর্ষনে ধসে পড়ায় পরিবারের লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে আনা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।