ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে ড. ইউনূসকে অব্যাহতি
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার পর ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ফলে মামলার ধার্য তারিখে ড. ইউনূসকে আর শ্রম আদালতে হাজিরা দিতে হবে না।
ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি চেয়ে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আবেদনে শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা এ আদেশ দেন। রোববার (১১ জুন) তথ্যটি নিশ্চিত করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন।
অভিযোগ গঠনের দিনই গত ৬ জুন বিদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি থাকার কারণে ব্যাক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দেওয়ার জন্য আবেদন করেন ড. ইউনূস। বলা হয় দেশের বাইরে তিনি বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই তার মামলায় ব্যাক্তিগত উপস্থিতি থেকে অব্যাহতির জন্যে আবেদন করা হয়েছে।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার পরই তার ব্যাক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় সেটি শুনানি হয়।
এর আগে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচারকাজ শুরু হলো। মঙ্গলবার (৬ জুন) ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা এ আদেশ দেন।
লেবার আইনের ৪ এর (৭) এবং (৮) ধারায় শ্রমিকদেরকে স্থায়ী করা হয়নি এবং ১১৭ জনকে আনলিভ দেওয়া হয়নি আর ২৩৪ ধারা অনুযায়ী তাদের মুনাফার ৫ শতাংশ দেওয়া হয়নি। এ কারণে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী।
তথ্য নিশ্চিত করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন আরও জানান, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া মামলায় অন্য তিন বিবাদী হলেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও শাহজাহান।
অভিযোগ গঠনের শুনানিতে আদালতে উপস্থিত ছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনিসহ চারজন বিবাদী নিজেদের নিরপরাধ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান।
আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করেছেন। আমরা মনে করি হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এ মামলা করা হয়েছে। মামলার ঘটনা দেওয়ানি প্রকৃতির। অথচ ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। তবে অভিযোগ গঠনের আদেশের হুবহু অনুলিপি সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা করে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আবদুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলা করেছিলেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান।