শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

শিরোনাম: র‍্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করছে না যুক্তরাষ্ট্র : ভেদান্ত প্যাটেল    জনগণের উন্নয়ন দেখে বিএনপির সহ্য হচ্ছে না : আইনমন্ত্রী    বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর    কুমিল্লায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ৫    শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ    মালয়েশিয়ান শ্রমবাজারে জনশক্তি পাঠানো বন্ধ হবে না     নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটার ও প্রার্থীদের বিশ্বাস জন্মেছে : ইসি    
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
উপনির্বাচনের মাঠে মাহিয়া মাহি, তৃণমূলে ক্ষোভ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২, ৯:১৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

বিএনপির এমপি আমিনুল ইসলামের পদত্যাগের পর শূন্য হওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের উপ-নির্বাচনে গণসংযোগ ও পথসভা শুরু করেছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি সরকার। তার হঠাৎ এমন পদক্ষেপে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সেখানকার আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতার মধ্যে।

মাস দুয়েক আগে রাজশাহী-১ (তানোর, গোদাগাড়ী) আসনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা জানিয়ে মাহি সে এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ ও গণসংযোগ শুরু করেন। কিন্তু গেল সোমবার থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের উপ-নির্বাচনে গণসংযোগ ও পথসভা শুরু করেন মাহি। এসময় নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশা ও ভোট চেয়ে বক্তব্য রাখেন তিনি।

মাহির এমন কাণ্ডে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের গোমস্তাপুর, নাচোল, ভোলাহাট উপজেলায় তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপনির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন নিয়ে সক্রিয় হওয়ায় তা ভালোভাবে দেখছেন না তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, আসন্ন ১ ফেব্রুয়ারি উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকেই দেয়া হোক
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গোমস্তাপুর উপজেলা ও রহনপুর পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করেছেন মাহিয়া মাহি সরকার। এসময় মাহির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, তার স্বামী ও গাজীপুর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য রাকিব সরকার। গণসংযোগে তিনি নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন।

হঠাৎ করেই মাহির মনোনয়ন প্রত্যাশায় সক্রিয় হওয়া নিয়ে নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, দেশের ইতিহাসে আওয়ামী লীগ একটি প্রাচীন ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। তাই এ দলের পক্ষে যে কেউই মনোনয়ন চাইতে পারেন। আমরা আশা করি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ নিশ্চয় রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা বিচার বিশ্লেষণ করেই নৌকার মনোনয়ন দিবেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই, দুর্দিনে যেসব ত্যাগী রাজনৈতিক নেতা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছে, দলকে সংগঠিত করেছে, এমন একজন নেতাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে। মাহিয়া মাহির সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীদের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি যেমন আমাদের কাউকে চেনেন না, তেমনি আমরাও তাকে কখনও রাজনীতির মাঠে দেখিনি। নির্বাচনের এক মাস আগে হঠাৎ করেই সক্রিয় হয়েছেন তিনি।

রহনপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আজিজ জানান, মাহিয়া মাহির সঙ্গে আওয়ামী লীগ বা সহযোগী কোনো সংগঠনের সম্পর্ক নেই। পৌর বা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীকে তিনি চেনেন না। কর্মীবান্ধব আওয়ামী লীগ নেতার হাতে আমরা নৌকার মনোনয়ন দেখতে চাই। আমরা মাহির সঙ্গে নেই। যেসব নেতা আমাদের পাশে ছিল, আমরাও তাদের সঙ্গে আছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক সদস্য বলেন, রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন কাউকে মনোনয়ন দেয়া আওয়ামী লীগের জন্য বিপদ সংকেত হিসেবেই আমরা মনে করি। এখানে অনেকেই রয়েছেন, যারা নিজ নিজ কর্মগুণে দলে সক্রিয় অবস্থান নিশ্চিত করেছেন। আশা করি, তাদের মধ্যেই কাউকে মনোনয়ন দেয়া হবে।

নাচোল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের বলেন, মানুষ রাজনীতিকে আলু-পটলের মতো পণ্য মনে করেছে। যেটা ইচ্ছে হলে বাজারে গিয়ে কিনে নেয়া যায়। রাজনীতিকে এমনটা মনে করা উচিত নয়। এমনটা হলে রাজনীতিবিদদের রাজনীতি করার দরকার নাই। রাজনীতি করার একটি সুষ্ঠু প্রক্রিয়া রয়েছে। তা অনুসরণ করে মাহিয়া মাহি আওয়ামী লীগে আসার পর এসব কর্মকাণ্ড করলে তা মানানসই ছিল। যেসব ব্যক্তি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় তাদেরকে নৌকার মনোনয়ন দিলে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করব।

গোমস্তাপুর উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি গোলাম মোস্তফা বলেন, একটি বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে যে কারও নৌকার মনোনয়ন চাওয়া গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। মাহির গণসংযোগ ও পথসভা শুরুর পর থেকে স্থানীয় নেতাকর্মীরা আমাদেরকে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।



জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ রুহুল আমিন বলেন, নৌকার মনোনয়ন দেয়ার বিষয়টি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করে। তিনি যাকে মনোনয়ন দেবে, আমরা তার পক্ষেই কাজ করব।

জানা গেছে, কিছু দিন আগেই মাহি ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট’-এর কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং রাজশাহী বিভাগের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন বিএনপির সাত সংসদ সদস্য। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ( নাচোল ,গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট) আসন শূন্য ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। গত ১১ ডিসেম্বর সংসদের স্পিকারের কাছে বিএনপি দলীয় ৬ জন সংসদ সদস্য পদত্যাগপত্র জমা দেন। পরের দিন জাতীয় সংসদ সচিবালয় থেকে তাদের আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়। ফলে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা থেকেই নির্বাচন কমিশন দেশের ছয়টি আসনে উপ-নির্বাচন ঘোষণা করে ১ ফেব্রুয়ারি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য আমিনুল ইসলাম ধানের শীষ প্রতীকে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৬৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জিয়াউর রহমান নৌকা প্রতীকে এক লাখ ৩৯ হাজার ৯৫২ ভোট পেয়ে হেরে যান। এবার আমিনুল ইসলাম পদত্যাগ করায় উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন মাহিয়া মাহি।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]