অভিযোগ উঠেছে, ওই টিউবওয়েল মুখে কীটনাশক ফেলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পানি পান করার সময় কীটনাশকের গন্ধ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
অসুস্থ শিক্ষার্থীদের হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলতাফুর রহমান জানান, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে স্কুলের ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী টিউবওয়েলের পানি পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অন্য শিক্ষার্থীরা বিষয়টি তাঁকে অবগত করে। পরে তিনিসহ অন্য শিক্ষকেরা বিদ্যালয়ের দুটি টিউবওয়েলের মধ্যে একটি টিউবওয়েলে পানিতে কীটনাশকের গন্ধ পান। তারপরই টিউবওয়েল সিলগালা করে রাখা দেন।
প্রধান শিক্ষক আরও জানান, এরই মধ্যে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী মাথা ঘুরতে থাকে ও বমি ভাব শুরু হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে তাদের প্রথম ৮ জনকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে এক একে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির আরও ৩২ জন শিক্ষার্থী শ্বাস কষ্ট ও বুক জ্বালাপোড়া শুরু হয় বলে জানায়। তাদেরকেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যালয়ে প্রায় সাড়ে চার শ শিক্ষার্থী রয়েছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক।
হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিরুল হক বলেন, প্রাথমিকভাবে শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণে রেখে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। তবে বিষক্রিয়া হলে যেসব লক্ষণ দেখা যায় তাদের মধ্যে এখনো সেসব লক্ষণ নেই। প্রত্যেক শিক্ষার্থী ভালো আছে, তবুও ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার পর তাঁদের ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
মনিরুল হক আরও বলেন, ওই স্কুলের টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষার করতে উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা করে বিষের উপস্থিতি আছে কিনা জানা যাবে।
এ দিকে এ ঘটনায় স্কুলটি পরিদর্শনে গিয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও হরিপুর থানার ওসি।
হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ইউএনও বহ্নি শিখা আশা বলেন, পানি পান করার পর বিষক্রিয়ায় দু-একজন শিক্ষার্থীর মধ্যে লক্ষণ দেখা যেতে পারে, তবে এত বেশি পরিমাণ শিক্ষার্থী অসুস্থ হওয়াটা কিছুটা অস্বাভাবিক। এটি প্যানিক অ্যাটাকও হতে পারে। এরপরও বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখছি।