শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ দুজনের বিরুদ্ধে করা মামলার কার্যক্রম বিচারিক (নিম্ন) আদালতে দুই মাসের জন্য স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে তার বিরুদ্ধে করা মামলাটি কেন বাতিল হবে না, এই মর্মে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৩ জুন) আগের আদেশ সংশোধন করে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ননীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর আগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতর। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলা করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান। পরে মামলার বিবাদীদের হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন আদালত।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের এমডি আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও শাহজাহান। এই তিন আসামিও পৃথকভাবে মামলার আবেদন করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের কর্মকর্তারা ড. ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে তারা শ্রম আইনের কিছু লঙ্ঘন দেখতে পান। এর মধ্যে ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এছাড়া কোম্পানির লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা থাকলেও তা তাদের দেওয়া হয়নি। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে এ মামলা করা হয়।
ওই মামলার বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনারি নিয়ে গত ১২ ডিসেম্বর ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মামলাটি কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। বিচারপতি মো. হাবিবুল গণি ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পরে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল আবেদন জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। পরবর্তীতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে জারি করা রুল দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে মামলাটি শুনতে বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন আদালত।