প্রকাশ: সোমবার, ১৬ মে, ২০২২, ৯:৩৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

চাটখিল থানার পরকোট ইউনিয়নের উত্তর রামদেবপুরের ফারুক ভূইয়ার বড় ছেলে শাহাদাৎ হোসেন সুমন ৩৫ বছর বয়সেই সাতটি বিয়ে করেছেন, তার প্রথম স্ত্রী ছাড়া বাকী ৬ স্ত্রীই পূর্ব ডিভোর্সী। সুমন মূলত তাদেরই টার্গেট করে যাদের প্রথম সংসার ভেঙ্গে যাওয়ার পর ২য় বার নতুন করে সংসারী হওয়ার জন্য আশায় বুক বাঁধত, সুমনের দেওয়া মিথ্যা তথ্য ও মিষ্টি কথার ফাঁদে পড়ে মেয়ের স্থায়ী সুখের জন্য বাবা মা স্থাবর অস্থাবর সম্পদ বিক্রি করে টাকা পয়সা দিত। টাকা পয়সা নেওয়া শেষ হলে সুমন খুব সচতুর ও নির্মমভাবে অসহায় এই মেয়েদের তাড়িয়ে দেয়।
সুমনের প্রথম স্ত্রীর নাম ফাতেমা আক্তার যার বাড়ি চাটখিল থানার পশ্চিম শোসালিয়া তিন নং পরকোট। প্রথম স্ত্রীর ১ টি কন্যা সন্তান আছে। ফাতেমা আক্তারের পিতা সৌদি প্রবাসী ছিল। পরনারীতে আসক্ত সুমন ফাতেমার পিতার কষ্টার্জিত সব টাকা নানা অজুহাতে হাতিয়ে নিয়ে ফাতেমাকে ত্যাগ করে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে প্রবাসের কষ্টার্জিত সব টাকা সুমনকে দিয়ে ও মেয়েকে সুখী দেখে যেতে পারেননি। দেশে এসে ফাতেমার বাবা নিদারুন অর্থকষ্টে দিন কাটিয়ে অবশেষে মৃত্যুবরন করেন। তারপর ঢাকা নিবাসী শাহিন বেগমকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজেকে অবিবাহিত দাবী করে বিয়ে করে,এই সংসারে ও তার দুটি সন্তান আছে। পরনারীর প্রতি আসক্তিতে অভ্যস্থ সুমন আবার ও বিয়ে করার জন্য শাহিন বেগমকে নির্যাতন করে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে শাহিন থানায় মামলা করে এবং ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রায় ৩ মাস সুমন জেল খাটে।
জেল থেকে জামিনে বের হয়েই সে আবারো ঢাকার কোনাপাড়া নিবাসী সুমি আক্তারকে বিয়ে করে।তার আগের বিয়ের খবর তৃতীয় স্ত্রী সুমির কাছে ফাঁস হয়ে গেলে সুমন ঢাকা ছেড়ে নোয়াখালীর চাটখিলে এসে পাশের রামগঞ্জ থানার পানপাড়ার মেয়ে সুমি কে বিয়ে করে তার নামে ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের লোন নেয়,সুমির দায়ের করা মামলায় সুমন গ্রেফতার হয়ে নোয়াখালী জেলা কারাগারে জেল খেটে জামিনে মুক্ত হয় এবং সংসার না করতে পারলে ও সুমিকে এখন ব্যাংকের ঋনের বোঝা বয়ে বেড়াতে হয়। এবার একই কায়দার তাকে ছেড়ে এসে নিজ থানা চাটখিলের সোমপাড়া নিবাসী আকলিমা বেগমকে বিয়ে করে এবং টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে ছেড়ে দেয়। এলাকাতে তার এইসব কর্মকান্ডের প্রতিক্রিয়া শুরু হলে সে কুমিল্লা চলে যায় এবং কুমিল্লার বাগমারা নিবাসী শারমিন আক্তারকে বিয়ে করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে নিজ এলাকায় ফিরে আসে। সুমন নিজ এলাকায় আসার কিছুদিন পর পূর্বেই সর্বশান্ত হওয়া তার ২য় স্ত্রী দুই সন্তানের জননী শাহিন বেগম অনেকটা অসহায় হয়ে সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সুমনের বাড়িতে আসে। কিন্তু সুমন শাহিন বেগমকে নিজের বাড়িতে রেখে সম্প্রতি সপ্তম বারের মত চাটখিল থানার নোয়াখলা ইউনিয়নের শারমিন আক্তারকে টাকার লোভে বিয়ে করে দশঘরিয়া বাজারে তাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকে। এদিকে ২য় স্ত্রী শাহিন বেগমকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে সপ্তম স্ত্রী শারমিন কে বাড়িতে এনে তোলার জন্য শাহিন বেগমেকে ঘরে আটকে রেখে প্রতিদিনই নির্মম নির্যাতন করে যাচ্ছে । দুটি সন্তান নিয়ে কোথাও যাওয়ার মত আশ্রয় না থাকায় শাহিন বেগমের আসহায় কান্নার আওয়াজ চার দেওয়ালের ভিতরই বন্দি হয়ে আছে।এই ব্যাপারে সচেতন এলাকাবাসী দ্রুত ওই মহিলা ও তার অবুঝ সন্তানদের সার্বিক নিরপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রসাসনিক উদ্যোগের আহবান জানিয়েছেন।
চাটখিল থানার ৩নং পরকোট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাহার আলম মুনশী এ বিষয়ে বলেন, এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অবশ্যই আমি সহায়তা করবো। বিষয়টা উনি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন এবং ভুক্তভোগী নারীদের জন্য আইনী পদক্ষেপে সহায়তা করবেন বলেও জানান ।