চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনেই বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন শ্রীলংকান ব্যাটার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। এতেই প্রথম দিনটা নিজেদের পাল্লা ভারি রাখলেন সফরকারীরা। প্রথম দিনের খেলা শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে শ্রীলংকা দলের সংগ্রহ ২৫৮ রান।
রোববার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলংকান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে।
শুরুতে আলগা বলে রানের মুখ খুলে দেন দুই পেসার খালেদ আহমেদ আর শরিফুল ইসলাম। তবে দিনের পঞ্চম ওভারে হয়েছিল জোরালো আবেদন। কিন্তু রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ।
ইনিংসের সপ্তম ওভারে প্রথমবারের মতো বল হাতে তোলেন নাঈম। ফিরেই বাজিমাত। ১৫ মাস পর জাতীয় দলের জার্সিতে নেমে প্রত্যাবর্তন রাঙালেন লংকান অধিনায়ক করুনারত্নেকে ফিরিয়ে। অফ স্টাম্পের একটু বাইরে পড়ে অ্যাঙ্গেলে ভেতরে ঢোকা বল কাট করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তবে এর আগে বল ছুঁয়ে যায় তার প্যাড। রিভিউ আবেদন করেন করুনারত্নে কিন্তু লাভ হয়নি। ফেরেন ৯ রানে।
করুনারত্নের আউটের পর উইকেটে দুই জন ডানহাতি ব্যাটসম্যান থাকায় নাঈমকে আর ব্যবহার করেননি মুমিনুল। তাইজুলকে বোলিংয়ে আনেন, তবে বাঁহাতি স্পিনার সুবিধা না করায় আবার ফেরানো হয় নাঈমকে।
১ উইকেট হারানো সফরকারীরা ঘুরে দাড়ানোর বার্তা দেয় ফার্নান্দো আর মেন্ডিসের ব্যাটে। আবার দলের ত্রাতা হয়ে আসেন নাঈম। ওভার দ্য উইকেটে করা অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি পা বাড়িয়ে খেলার চেষ্টা করেন ফার্নান্দো। ঠিক মতো পারেননি, ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে লিটন দাসের গ্লাভসে। ভাঙে ৮১ বল স্থায়ী ৪৩ রানের জুটি। ফার্নান্দো ফেরেন ৩৬ রানে।
উইকেট না পেলেও লঙ্কানদের চাপে রেখেছিলেন সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলামরা। মেন্ডিসকে ফিরিতে তৃতীয় উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর নিজেকে পুরোপুরি গুটিয়ে নিয়েছিলেন মেন্ডিস। মাঝে তেমন একটা শট খেলার চেষ্টা করেননি তিনি।
তাইজুলের বলটি ছিল মারার মতোই। শর্ট বল স্পিন করে বেরিয়ে যাচ্ছিল। অনায়াসেই হতে পারত বাউন্ডারি। মেন্ডিস চেষ্টা করলেন লেগে ঘুরাতে, ঠিক মতো পারলেন না, সহজ ক্যাচ হয়ে গেল মিডউইকেটে। ভাঙল ২০৯ বল স্থায়ী ৯২ রানের জুটি।
শেষ সেশনে চা-বিরতির পর বল হাতে নিয়েই সাফল্য পান সাকিব আল হাসান। চমৎকার এক ডেলিভারিতে বিদায় করেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে।
পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন ধনাঞ্জয়া। ঠিক মতো পারেননি, ব্যাটের কানা ছুঁয়ে প্যাডে লেগে ক্যাচ যায় স্লিপের দিকে। প্রথম স্লিপ থেকে কিছুটা সামনের দিকে এগিয়ে ঝাঁপিয়ে মুঠোয় নেন মাহমুদুল হাসান জয়।
আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নেন মুমিনুল হক। দুটি ব্যর্থ রিভিউয়ের পর এবার সফল হয় বাংলাদেশ। আল্ট্রা এজে ব্যাটে বল স্পর্শ করার প্রমাণ মেলার পর পাল্টায় সিদ্ধান্ত। ভাঙে ২৫ রানের জুটি।
দিনের বাকিটা সময় দলকে আর বিপদের মধ্য পড়তে দেননি ম্যাথিউস, তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন চান্দিলাম। দুই ব্যাটসম্যান শাসন করেছেন টাইগার বোলাররা। তাতে খেই হারি আলগা বলে রান দিয়েছেন তাইজুল, খালেদরা। সুযোগ পেয়ে কাজে লাগিয়েছেন ম্যাথিউস, তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরি। ১১১ বলে অর্ধশতক করা এই ডানহাতি ১৮৩ বলে ক্যারিয়ারের দ্বাদশ সেঞ্চুরির দেখা পান। টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটি তার প্রথম।
নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২ তম শতক তুলে নিয়ে ১১৪ রানে আগামীকাল সোমবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিন শুরু করবেন ম্যাথিউস। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের সঙ্গে ৭৫ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটিতে ৩৪ রানে অপরাজিত আছেন দীনেশ চান্দিমাল। বাংলাদেশের হয়ে নাঈম হাসান ২, সাকিব আল হাসান আর তাইজুল ইসলাম সমান ১টি করে উইকেট নেন।