বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য ভাড়া কমানোর বিষয়ে বিআরটিএ অত্যন্ত আন্তরিক। বৈঠকে বেশ কিছু বিষয় উঠে এসেছে। পরিবহন নেতাদের পক্ষ থেকে টাস্কফোর্স গঠনসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবগুলো বিবেচনায় নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, হাফ ভাড়া বাস্তবায়নে পরিবহন নেতারা আন্তরিক। কিন্তু তাদের যে ক্ষতি হবে তা কীভাবে পূরণ করা হবে? তাদের ক্ষতির জন্য কত ভর্তুকি দেওয়া হবে এসব সিদ্ধান্তের জন্য সরকার ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব এসেছে। এ বিষয়ে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আবার বৈঠক হবে। আমরা আবারও বৈঠক করব। যত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় তার জন্য চেষ্টা করা হবে।
তিনি জানান, বৈঠকে ঢাকায় কত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কতজন ছাত্র, এদের মধ্যে কতজন বাসে উঠে এসব বিষয়ে তালিকা চেয়েছেন পরিবহন নেতারা। আমরা এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করব। তারা তথ্য দেবেন।
এ ছাড়া বিআরটিএ’র সঙ্গে আলোচনায় নেতারা ১১টি প্রস্তাব দিয়েছেন।
পরিবহণ নেতাদের দেওয়া ১১ প্রস্তাবগুলো হলো:
১. সরকার সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিআরটিসি পরিচালিত বাসে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া নেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে কীভাবে- তা জানা থাকলে আমাদের জন্য ভালো হবে। তা না হলে বিআরটিসি বাসে হাফ ভাড়া অন্য বাসগুলোতে কেন নয় বলে উত্তেজনা আরও বাড়বে।
২. হাফ ভাড়া শিক্ষার্থীরা দেবে বাকি টাকা পূরণ করা হবে কীভাবে এবং কোন তহবিল থেকে?
৩. সারা দেশে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার জন্য বাস ব্যবহার করেন কতজন? হাফ ভাড়া নিলে ভর্তুকি কত টাকা দিতে হবে?
৪. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা কীভাবে কনশেসন প্রদান করে- তা জানা দরকার।
৫. শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহণ কার্ড চালু করা দরকার, যা প্রতিষ্ঠান প্রদান করবে। তাহলে কোন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী সেটি নিশ্চিত সম্ভব হবে।
৬. এ বছর শিক্ষা বাজেট ৭১ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকার সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মিলে মোট বাজেট দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা। প্রতি বছর শিক্ষা বাজেট থেকে বেশকিছু টাকা ফেরত যায়। এই টাকাটা পরিবহণ ভর্তুকি হিসেবে দেওয়া যেতে পারে।
৭. যেসব পরিবহণে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া কার্যকর হবে, সেসব পরিবহণে কিছু বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
৮. দেশে সাড়ে ৪ কোটি ছাত্র। তাদের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ব আছে। একটি যুক্তিসম্মত নিয়ম কার্যকর হলে সেটি ছাত্র এবং পরিবহণ শ্রমিক উভয়ের জন্য মঙ্গলজনক হবে।
৯. বড় শহরের মধ্যে ঢাকা এবং চট্টগ্রামেই নগর পরিবহণ আছে। বাকি সারা দেশে সাধারণত স্বল্প দূরত্বে শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে।
১০. সরকার, পরিবহণ মালিক এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিয়ে বিভিন্ন স্তরে মনিটরিং সেল গঠন করা যেতে পারে। তাহলে যে কোনো উত্তেজনা সহজেই প্রশমন করা সম্ভব হবে।
১১. সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বেতন কম। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বেশি। উভয় ক্ষেত্রে যারা গণপরিবহণ ব্যবহার করেন, তাদের জন্য পরিবহণ ফি ঠিক করে সেটি দিয়ে কেন্দ্রীয় তহবিল গঠন করা যেতে পারে।
ভোরের পাতা/কে