বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিরোনাম: শুক্রবার নাগাদ আসতে পারে ভারতের পেঁয়াজ    বিএনপি স্বাধীনতার মর্মার্থকে অকার্যকর করতে চায়: কাদের    বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়াই যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা    একনেকে ৮ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন    ময়মনসিংহে বাসচাপায় অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত    বায়ুদূষণের শীর্ষে দিল্লি, তৃতীয় ঢাকা    কাতারের আমির ঢাকায় আসছেন এপ্রিলে   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
সিভিল সার্জন অফিসের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী ‘আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ’!
স্থানীয়দের কাছে নিজেকে সিভিল সার্জন পরিচয় দেন
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:
প্রকাশ: সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১, ৮:৫০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন অফিসের কর্মচারী জাকির হোসেন চতুর্থ শ্রেনী হতে পদোন্নতি পেয়ে এখন তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী  হয়ে‘আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ’ বনে গেছেন। এলাকার লোকজনের নিকট নিজেকে সিভিল সার্জন পরিচয় দেন। তাকে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা হিসাবে চিনেন স্থানীয়রা। 

ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ৩১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান জামালের নিকট  জাকির হোসেন সম্পর্কে প্রশ্ন করলে উত্তরে জাকির হোসেনকে স্থানীয়রা সাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা (সিভিল সার্জন) হিসাবে চিনেন। ময়মনসিংহ শহরের শম্ভুগঞ্জ নিজ এলাকায় ৪ তলা ফাউন্ডেশনের বাড়ী, নিজের নামে বেনামে নামে দুই একর  সম্পদ গড়ে তুলেছেন তিনি। এছাড়াও নিজ এলাকায় বিশাল মার্কেট।

অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মূদ্রাক্ষরিক জাকির হোসেন চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী হিসাবে নিয়োগের বিষয় অস্বীকার করলেও সূত্র বলছে,  ২৫ মে ১৯৯১ সালে সিকিউরিটি গার্ড হিসাবে নিয়োগ পান তিনি। এরপর ২৪ আগষ্ট ১৯৯৭ সালে বিভাগীয় মনোয়ন বোর্ড তাকে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মূদ্রাক্ষরিক পদে পদোন্নতি দেন। সূত্র নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন অফিসের হিসাব রক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন।

জানা গেছে, ময়মনসিংহ স্বাস্থ্য বিভাগের নৈশ প্রহরীর চাকরী পেয়ে জাকিরের ভাগ্যোন্নয়ন শুরু  হয়। চাকুরীর শুরুতে  ময়মনসিংহ স্বাস্থ্য বিভাগের সিকিউরিটি গার্ড হিসাবে চাকরী যোগদান করেন। যোগদানের  ৫ বছরে পদোন্নতি পেয়ে একেবারে শূন্য থেকে বিশাল বিত্তবৈভবের মালিক হয়ে যান জাকির হোসেন। তিনি  ময়মনসিংহ সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মূদ্রাক্ষরিক হিসেবে বর্তমানে কর্মরত আছেন। চাকরির শুরুতে  ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। 

বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নিবন্ধন ও নবায়ন করার জন্য  সিভিল সার্জনের পরিদর্শন ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের  খরচের অযুহাতে দেখিয়ে  হাতিয়ে নেন বিপুল পরিমানে টাকা। তাকে  ঘুষ দিয়েও লাইসেন্স  না পেয়ে  সিভিল সার্জন অফিসে লাইসেন্সের জন্য ঘুরতে হয়েছে মাসের পর মাস। তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ  ময়মনসিংহের বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের মালিকদের। 

এসব অভিযোগের  প্রেক্ষিতে ওই জাকির হোসেনের পিছনের তথ্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে  বেরিয়ে এলো অন্য ঘটনা। চর ইশ্বরদিয়া গ্রামের আবু তাহের ২০১২ সালের দিকে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিবেশির সাথে সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে একটি মামলা হলে, সিভিল সার্জন অফিসের জাকির তাকে মামলা হতে নাম কেটে দেওয়ার কথা বলে ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। তৃতীয় শ্রেণির চাকরি করে কোটিপতি বনে যাওয়ার ম্যাজিক দেখিয়ে তিনি এখন নিজ এলাকা নগরীর শম্ভুগঞ্জ চর ইশ্বরদিয়ার সাধারণ মানুষের আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হয়েছেন। অদৃশ্য খুঁটির জোরেই তিনি ‘আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন।  

শহরের নিউ রুম্পা নাসিং হোমের শেয়ার হোল্ডার শাহজাহান জানান, তার  লাইসেন্স করিয়ে দেয়ার নামে অফিস ও  স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খরচ বাবদ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন অফিস সহকারী জাকির হোসেন। প্রতিশ্রতি নামের একটি ক্লিনিক এর লাইসেন্স বাবদ দিয়েছিলাম ৯০ হাজার টাকা। সেই লাইসেন্সটিও হয় নাই, টাকাও ফেরৎ দেয় নাই। এছাড়া আমার এক বন্ধু শাপলা ক্লিনিকের মালিকসহ অনেকের নিকট হতে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জাকির হোসেন।



নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নতুন লাইসেন্স কিংবা নবায়নের জন্য সিভিল সার্জন অফিসে খরচ বাবদ ঘুষ দিতে হয়। এলাকার লোকজনের নিকট নিজেকে এই নামে পরিচয় দিতেন। তাদের পুর্বে তেমন সম্পদ ছিল না, এখন অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন।

এ সব অভিযোগের বিষয়ে জাকির হোসের সাথে ফোনে কথা হলে তিনি জানান, তিনি চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসাবে চাকরিতে যোগদান করেননি তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী হিসাবে চাকরীতে যোগদান করেছেন। সিভিল সার্জন অফিসের লাইসেন্স সংক্রান্ত ফাইগুলোর কাজ গত দেড় বছর ধরে করেন না। দেড় বছর পুর্বে লাইসেন্স সংক্রান্ত বিষয়গুলো তিনি দেখাশুনা করতেন। 

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ বিষয়ে প্রশ্ন করলে উত্তরে বলেন, আপনাকে একজন অভিযোগ করতেই পারে, এইটা তো অভিযোগ হলো না। আমি যদি বলি আপনি আমার কাছে চাঁদা চাইতেছেন এইটা কি অভিযোগ হলো। আমার বিষয়ে একজন সাংবাদিক পত্রিকায় লিখেছিলো তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আপনিও ভেবে চিন্তে লিখবেন।

ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম জানান, তিনি সম্প্রতি ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন হিসাবে যোগদান করেছেন। অফিস সহকারী জাকির হোসেন সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেন না।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]