শনিবার (২৪ জুলাই) বাদ যোহর দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে খিলগাঁও মাটির মসজিদে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফকির আলমগীরের ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব।
এর আগে আজ শনিবার সকাল ১১টা ১৬ মিনিটে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের পল্লীমা সংসদ প্রাঙ্গণে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এরপর সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয় বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ফকির আলমগীরের মরদেহ।
দুপুর পৌনে ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছায় তার মরদেহ।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যবস্থাপনায় এখানে ফকির আলমগীরের নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ ‘কঠোর বিধিনিষেধের’ মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়৷ বৃষ্টির কারণে দুপুর সোয়া ১২টায় নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি শুরু হয়। দুপুর ১টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য রাখা হয়।
শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৫ জুলাই মধ্যরাত থেকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ফকির আলমগীর। ১৮ জুলাই চিকিৎসকেরা তাঁকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দেন। গতকাল রাত সাড়ে নয়টার দিকে করোনায় আক্রান্ত চিকিৎসাধীন এ শিল্পীর হার্ট অ্যাটাক হয় বলে জানিয়েছেন তাঁর ছেলে মাশুক আলমগীর রাজিব।
ফকির আলমগীরের মৃত্যুতে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ফকির আলমগীর ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের স্মরণীয় দিনটিতে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মো. হাচেন উদ্দিন ফকির, মা বেগম হাবিবুন্নেসা।
স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপগানের বিকাশে ভূমিকা রাখেন শিল্পী ফকির আলমগীর। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তাঁর কণ্ঠে ‘সান্তাহার জংশনে দেখা’, ‘বনমালী তুমি’, ‘কালো কালো মানুষের দেশে’, ‘মায়ের একধার দুধের দাম’, ‘আহা রে কাল্লু মাতব্বর’, ‘ও জুলেখা’সহ বেশ কিছু গান তুমুল জনপ্রিয়তা পা
এর মধ্যে ‘ও সখিনা’, ‘নাম তার ছিল জন হেনরি’সহ আরও কিছু গান মানুষের মুখে মুখে ফেরে। তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা। এ ছাড়া বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি, জনসংযোগ সমিতির সদস্যসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সরকার ১৯৯৯ সালে ফকির আলমগীরকে একুশে পদক দেয়।