প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২২ জুলাই, ২০২১, ১০:৫৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
এই ঈদ আসলে তেমন ঈদ নয় যেটা আমরা আগে সব সময় আনন্দের সাথে উদযাপন করতাম। বাঙালির যে উৎসব এবং সমস্ত উৎসবে আমরা জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সেটা উদযাপন করি সেটার চিত্রটা কিন্তু এখন নেই, কেননা এখন করোনাকালীন সময়। আমাদের ঘরে ঘরে ঈদ উৎসব উদযাপন করার মতো প্রেক্ষাপট এসে পরেছে। আমরা এখন যারা করোনা মহামারিতে জর্জরিত আছি তারা সবাই কোনো না কোনোভাবে এই ঈদ আনন্দটা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেই। আমরা ঘরে বসেই অনলাইনে আত্মীয় স্বজনদের সাথে কথা বলছি, একেক জন কিভাবে ঘরে বসে ঈদ উদযাপন করেছে সে খবর এখন আমরা অনলাইনে বসেই নিচ্ছি।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৪০৮তম পর্বে বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) আলোচক হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন- সংগীত শিল্পী, নজরুল গবেষক, নজরুল সংগীত শিল্পী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুজিত মোস্তফা, সংগীত শিল্পী অধ্যাপক ইফফাত আরা নার্গিস, কবি ও শিক্ষক আয়শা জাহান নূপুর, সংগীত শিল্পী ঐশিকা নদী। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার সিনিয়র রিপোর্টার উৎপল দাস।
সুজিত মোস্তফা বলেন, আসলে ঈদ আমার জন্য যথার্থ ঈদ কারণ আমি সারা বছর প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত থাকি। ঈদের দিন আমি একটু ছুটি পাই। আমার ছাত্র ছাত্রীরা আমাকে ঈদের আগের দিন ও ঈদের পরের দিন আমাকে একটু ছাড় দেই, কেউ কেউ আবার আমকে ঈদের দিনও ছুটি দিতে চায় না। তারমধ্যে এখন তো করোনাকাল চলছে আর আমি এমনিতেও কোনো জরুরী কিছু না হলে বাইরে বের হই না। এই করোনাকাল হোক আর যাই হোক অর্থ উপার্জনের জন্য তো বাইরে বের হতেই হবে না হলে করোনায় মৃত্যুর আগে মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। তারপরেও একেবারেই অপরিহার্য কারণ ছাড়া আমি ঘর থেকে সচরাচর বের হই না এবং বাসার অন্য কেউও যাতে না বের হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখি। এবারের ঈদেও তাই হয়েছে, গৃহবন্দী ছিলাম। আমি কোরবানি দেয়নি কিন্তু আমার আত্মীয় স্বজন ও ছাত্রছাত্রীদের তরফ থেকে কোরবানিতে যে উপহার আসে সেটা চলে এসেছে। ঈদের দিন রান্না তো একটু ভালো হতেই হবে তার মধ্যে আমার ভোজন রসিকের একটা অখ্যাতি আছে আগের থেকেই। খাওয়া দাওয়া হয়েছে প্রচুর। কিন্তু আমি ঘুমিয়েছি প্রচুর কারণ ঈদের যে সুযোগটা আছে সেটা আমি এবার ঘুমের মাধ্যমে কাজে লাগিয়েছি। আবার অনুষ্ঠান দেখেছি কিছু। আগে বিভিন্ন চ্যানেলে উৎসাহ নিয়ে অনুষ্ঠান দেখতাম এবার নিজেই ঈদের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি সেটা আজকে দেখানো হয়েছে। কিন্তু আগের তুলনায় টেলিভিশন অনেক কম দেখা হয় কারণ এখন যেমন আমরা অনলাইন আড্ডায় মেতে উঠেছি ঠিক এই প্রযুক্তির গুণে আমরা এখন অনলাইনে সব কিছু দেখি। প্রতিবারের মতো এবারও অনেক শুভেচ্ছা পেয়েছি কিন্তু অনেককেই ফিরতি শুভেচ্ছা পাঠাতে পারিনি কারণ অনেক শুভেচ্ছা মেসেজ আসে যার উত্তর না দিলে অনেকেই মন খারাপ করে। কিন্তু উত্তর না দিয়েও যে আমাদের ভক্ত স্রোতা বন্ধু বান্ধবদের প্রতি আমাদের যে ভালোবাসা রাখে সেটা আসলে প্রকাশ করতে পারি না। যাই হোক এটা আক্ষেপের জায়গাটা বললাম কিন্তু আনন্দের জায়গাটা হচ্ছে এবার ঘুমানোর অনেক সুযোগ পেয়েছি।
বক্তব্যের শেষে তিনি ভোরের পাতা সংলাপ স্রোতাদের জন্য নজরুল গীতি 'সেদিন ছিল কি গোধূলি-লগন শুভদৃষ্টির ক্ষণ, চেয়েছিল মোর নয়নের পানে যেদিন তব নয়ন?' গানটি গেয়ে শুনান।