কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সঞ্জিত মন্ডলের নেতৃত্বে 'ব্লুবেরি' নামক মানবাকৃতির একটি রোবট তৈরি করেছে টিম "কোয়াণ্টা রোবটিক্স"।
এ প্রজেক্টে ১ লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমী (নেকটার)।
রোবটটি তৈরি করতে প্রায় সাড়ে ৩ মাসের মতো সময় লেগেছে বলে জানান দল নেতা সঞ্জিত মন্ডল। এ দলের বাকি সদস্যরা হলেন, আইসিটি বিভাগের জুয়েল দেবনাথ ও সিএসই বিভাগের মিষ্টু পাল।
তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মানুষের মতো আচরণ করা, প্রায় সকল প্রশ্ন-উত্তরের জবাব দেয়া, বাসায় গ্যাস লিকেজের কিংবা আগুন লাগার ব্যাপারে অবগত করা কিংবা আরেকটু উন্নত করা গেলে করোনার স্যাম্পল কালেক্ট করার মত অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে রোবোটটিকে। এছাড়া প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক হিসেবে এবং বাচ্চাদের বিনোদন দিতে এবং যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়ার মাধ্যমে নতুন কিছু শেখানোর কাজেও ব্যবহার করা যাবে এটিকে।
এ রোবটটিতে ব্যবহার করা হয়েছে রাসবেরি পাই মাইক্রো প্রসেসর ও আর্দুইনো মেগা মাইক্রোকন্ট্রোলার।
রোবটটির ব্যাপারে সঞ্জিত মন্ডল বলেন, 'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই ডিপার্টমেন্টের প্রাক্তন ছাত্র আবু মুসা আসারী ভাইয়ের সহযোগিতা পেয়েছি কাজটি করার সময়। দেশের সকল স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রোবট তৈরিতে আকৃষ্ট করার একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা এটি। ভবিষ্যতে এ রোবটটিকে আরো উন্নত করা সম্ভব, চাইলে প্রায় প্রত্যেক দিনই আপডেট করা যাবে। সামনে আরো নতুন অনেক কাজ করার ইচ্ছা আছে রোবট নিয়ে।'
এই বিষয়ে জানতে চাইলে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সজল চন্দ্র মজুমদার বলেন, 'এটা খুবই আনন্দের এবং ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের জন্য খুবই গর্বের বিষয় যে সে এরকম একটা আর্টিফিশিয়াল রোবট তৈরি করেছে। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সে শুরু থেকে এমন সৃষ্টিশীল কাজ করে যাচ্ছে। উপযুক্ত পরিবেশ ও সহযোগিতা যদি সে পায় তাহলে সে আরো উন্নত মানের রোবট তৈরি করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি'।
তিনি আরো বলেন, 'ভবিষ্যতে সে যেন আরো ভালো কিছু করতে পারে তারজন্য বিভাগ এবং বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ সবসময় তার পাশে থাকবে। আশা করি তাকে দেখে ডিপার্টমেন্টের অন্য ছেলে মেয়েরাও আগ্রহী হবে'।
প্রসঙ্গত, সঞ্জিত মন্ডলের নেতৃত্বে ২০১৯ সালে দেশের চতুর্থ মানবাকৃতির রোবট 'রোবট সিনা' তৈরি করা হয়েছিল। এতে ব্যয় হয়েছিল আটত্রিশ হাজার টাকা।