ডা. শাইখ ইসমাইল আজহারী
সিয়াম সাধনার মাস রামাদান। রাহমাতে পরিপূর্ণ এ মাসটি। আমাদের হাজারো আয়োজন থাকে রামাদানকে ঘিরে। সাওম পালন এ মাসের মূল আকর্ষণ। এর সাথে নামাজ, জিকর, তিলাওয়াতের আবহ বিরাজমান থাকে। সাহরী আর ইফতারে আমাদের প্লেটগুলো উপচে পড়ে বাহারি খাবারের আয়োজনে। এই যে এতো খাবারের আয়োজন তা কী আসলেই আমাদের কোন উপকারে আসে নাকি উল্টো ক্ষতি করে বসে? আসুন জেনে নিই সাহরী-ইফতারে কোন খাবারগুলো আমাদের এই রোজার মাসে সুন্দর জীবন যাপনে সাহায্য করতে পারে।
সাহরীতে: প্রথম কথাই হল ভরপেটে খাওয়া পরিহার করতে হবে। আমাদের মাঝে একটি ভুল ধারণা আছে- ভরপেট খেলেই মনে হয় সারাদিন অনেক শক্তি পাওয়া যাবে, কিন্তু এটা মোটেও ঠিক নয়।
• পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
• পরিমাণমতো ভাতের সাথে শাকসবজি বেশি পরিমাণে রাখতে হবে। ডিম, দেশি মুরগির মাংস, গরুর মাংস, কলিজা, মগজ রাখা যেতে পারে।
• চিনি ছাড়া দুধ খাওয়া যেতে পারে।
• চা-কফি কোনভাবেই খাওয়া যাবে না।
সাহরীতে একদম কিছু না খেতে পারলেও ২/৪ টা খেজুর ও ২/৩ গ্লাস পানিই আপনার সারাদিনের জন্য যথেষ্ট হতে পারে।
ইফতারিতে যা করণীয়:
• পর্যাপ্ত পানি, স্যালাইন বা ডাবের পানি খেতে হবে।
• চিনিজাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।
• ২/৪ টা খেজুর, ভিটামিন সি ও এ যুক্ত ফল, পেয়ারা, কমলা, লেবু, মাল্টা, আঙ্গুর, পেঁপে, বেল এগুলো খেতে হবে।
• ডুবো তেলে ভাজা খাবার পরিহার করতে হবে।
• ছোলা- মুড়িও রাখতে পারি ইফতারে।
• চিড়া ভেজা পানিও পেটের অনেক উপকারে আসে।
রাতের খাবার: তারাবীহ নামাজের আগে বা পরে যখনই খাওয়া হোক না কেন, ভাত বা রুটি যেটাই খাওয়া হোক না কেন তা যেন হয় অল্প ও পরিমিত।
• শাকসবজি ও শসা,গাজরের সালাদ খাবারের মেনুতে বেশি করে রাখতে হবে।
• খাবারে ডিম, দেশি মুরগির মাংস, তেলযুক্ত মাছ রাখতে হবে।
• গরু বা খাসির মাংস, কলিজা, মগজও থাকবে তবে তা শরীরের চাহিদা অনুযায়ী।
মনে রাখতে হবে:
• একবারে অনেক খাওয়ার অভ্যাস পরিহার করে একটু একটু করে বারবার খেতে হবে।নিয়মিত বিরতিতে পানি পান করতে হবে।
• সাহরী করে একটু হাঁটার অভ্যাস করতে হবে।
• সাওম ও রোজা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে এবং টেস্টোস্টেরন ও গ্রোথ হরমোনের নিঃসরণ বাড়ায় যা সুস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক।
লেখক: ডা. শাইখ ইসমাইল আজহারী। এম.বি.বি.এস(ঢাবি), সিএমইউ, ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মগবাজার, ঢাকা
ভোরের পাতা/এএম