প্রকাশ: রোববার, ১১ এপ্রিল, ২০২১, ২:৩৫ এএম | অনলাইন সংস্করণ
বিজয়ের ৫০ বছর উপলক্ষে আগামী ১৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলছিল ঢাকাবাসীর নতুন স্বপ্ন উড়ালসেতুর মেট্রোরেল পথের কাজ। কিন্তু করোনার ভয়ানক থাবা এসে পড়ে মেট্রোরেল প্রকল্পের সাথে জড়িতদের উপর। গত সপ্তাহে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এই প্রকল্পের সাথে জড়িত ৪৮ জন, এই প্রকল্পে মোট আক্রান্ত ৫১৮ জন। করোনার প্রভাব মেট্রোরেলের উপর পড়লেও কেমন এগিয়ে চলছে কাজ? বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তীতে কী চালু হবে মেট্রোরেল?
প্রকল্পটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. এ. এন সিদ্দিক জানান, কর্মীদের উপর করোনার প্রভাব পড়ায় পিছিয়ে যেতে পারে উদ্বোধনের তারিখ তবে থামবে না প্রকল্পের কাজ, কাজের গতি কিছুটা কমে গেলেও দুই ধাপে চলমান আছে মেট্রোরেলের কাজ। জানা যায়, এ প্রকল্পে ৭ হাজার কর্মী কাজে নিয়জিত। যার মধ্যে ৬ হাজার বাংলাদেশি, ১ হাজার বিদেশি কর্মী রয়েছেন।
চলমান প্রকল্পে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রথম পর্যায়ে গাবতলী কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ১০টি শয্যা ও উত্তরার পঞ্চবটি কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ১৩টি শয্যার আরেকটি ফিল্ড হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। প্রয়োজনে এই দুটি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা আরও বাড়ানোর কথা জানান প্রকল্পটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি আরও জানান, চলতি মাসের ২৩ তারিখের মধ্যে মেট্রোরেলের প্রথম কোচ ঢাকা এসে পৌঁছাবে, প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬১ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ‘উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে কাজের ৮৩ দশমিক ৫২ শতাংশ ও আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজের ৫৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে।
২০১৬ সালের ২৬ জুন এমআরটি-৬ প্রকল্পের নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে সূচনা হয় ঢাকা মেট্রোর নির্মাণকাজের । এমআরটি-৬ এর স্টেশন ও উড়ালপথ নির্মাণের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় ২০১৭ সালের ২ আগস্ট। এদিন উত্তরা থেকে আগারগাও পর্যন্ত ১২ কিলোমিটারের উড়ালপথ ও স্টেশন নির্মাণ শুরু হয়। ২৫ ফেব্রæয়ারি ২০১৯, আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের স্টেশন ও উড়ালপথ নির্মাণ শুরু হয়। ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর এই প্রকল্পের উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে।
২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর এমআরটি-১ এবং এমআরটি-৫ নামক লাইন দুটির নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদিত হয়। এমআরটি-১ প্রকল্পের আওতায় বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর ও নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত মোট ৩১.২৪ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল নির্মিত হবে। এই প্রকল্পের মোট খরচ ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপান সরকার দেবে ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা, বাকি ১৩ হাজার ১১১ কোটি টাকা আসবে সরকারি তহবিল থেকে। এমআরটি-১ প্রকল্পে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১৬ দশমিক ২১ কিলোমিটার হবে পাতাল পথে এবং কুড়িল থেকে পূর্বাচল ডিপো পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার হবে উড়ালপথে। নতুন বাজার থেকে কুড়িল পর্যন্ত ৩ দশমিক ৬৫ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রানজিশন লাইনসহ ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এই মেট্রোরেলের ১২টি স্টেশন থাকবে মাটির নিচে এবং ৭টি থাকবে উড়াল সেতুর ওপর।
ভোরের পাতা/এএম