সোমবার ২০ মে ২০২৪ ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

শিরোনাম: দুর্ঘটনার কবলে ইরানের প্রেসিডেন্ট রইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার    দল হিসেবে পূর্বের বৈচিত্র্য হারিয়েছে আওয়ামী লীগ : জিএম কাদের    ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে নির্দেশনা, না মানলে ব্যবস্থা: বিআরটিএ    বিএনপি নেতা ইশরাককে কারাগারে প্রেরণ    এনবিআর চেয়ারম্যানকে আদালত অবমাননার নোটিশ     রিকশাচালক-পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ পথচারী    কালশীতে ট্রাফিক পুলিশের বক্সে আগুন দিয়েছে আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
ফের ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি, ঝুঁকিপূর্ণ ২৯ জেলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বুধবার, ৩১ মার্চ, ২০২১, ৫:২০ এএম | অনলাইন সংস্করণ

দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ফের ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। গত দুদিন ধরেই  করোনায় সর্বোচ্চসংখ্যক রোগী শনাক্ত হচ্ছেন।  বিশ্বে ৩৩তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লাখ অতিক্রম করেছে। ৮ মার্চ প্রথম করোনা দেখা দেওয়ার পর গত সোমবারই প্রথম দেশে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ১৮১ জন রোগী শনাক্ত হন। সেদিন শনাক্ত হার ছিল ১৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও মারা যান ৪৫ জন। পরের দিন গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৪২ জন রোগী শনাক্ত হন। এদিন শনাক্ত হার ছিল ১৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ ও মারা যান ৪৫ জন। এর আগে গত বছর ২ জুলাই সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন। সেদিন শনাক্ত হার ছিল ২১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এ মাসের শুরু থেকেই সংক্রমণ বাড়তে বাড়তে গত দুদিন সংক্রমণের সর্বোচ্চ রেকর্ড হলো।

গত দু'দিনের সংক্রমণ পরিস্থিতি গত বছরের জুন-জুলাই মাসকেও পেছনে ফেলেছে। এতে করোনা নিয়ে মানুষের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক বাড়ছে। সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি কারণকে দায়ী করেছেন। সেগুলো হলো- মাস্ক ব্যবহার না করা, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলাফেরা, বিয়ে, ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজন, ট্যুরিজম স্পটগুলোতে বাড়তি ভিড় এবং যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া নতুন ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ।


করোনাভাইরাসের প্রকোপ এখন সারা দেশেই বাড়ছে। তবে সংক্রমণের হার বিবেচনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, ফেনী, চাঁদপুরসহ ২৯টি জেলাকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয় থেকে ১৮ দফার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন। এতে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এটা মানতে হবে। আগামী অন্তত দুই সপ্তাহ এ নির্দেশনা মানতেই হবে।

এসব নির্দেশনায় স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। লকডাউনের পরিবর্তে সর্বোচ্চ সংক্রমিত জায়গাগুলোতে আন্তঃজেলা বাস চলাচল সীমিত বা বন্ধ এবং সভা-সমাবেশ সীমিত বা বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এমনকি রাত ১০টার পর প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়ার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তবে দোকানপাট বন্ধ রাখার ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাবেচা করতে বলা হয়েছে।

সরকারের এসব নির্দেশনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কাজে লাগবে বলে মত দিলেও সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষজ্ঞরা আরও কঠোর নির্দেশনার প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন। তাদের মতে, মানুষের জীবন-জীবিকার বিষয়টি মাথায় রেখে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া যায়নি। তাই যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেখানে ন্যূনতম ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস ব্যবস্থাপনা কোর কমিটির সদস্য ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেন বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে দ্বিতীয় দফার সংক্রমণ হয়েছে। আবার কোনো কোনো দেশে তৃতীয় দফায়ও সংক্রমণ ছড়িয়েছে। বাংলাদেশে এখন দ্বিতীয় দফার সংক্রমণ চলছে। কিন্তু অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি দ্রুতই চূড়ার দিকে অর্থাৎ পিকে চলে যাচ্ছে।



সংক্রমণ পরিস্থিতি দ্রুত পিকে চলে যাওয়া পেছনে মানুষের অসতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণকে দায়ী করে ডা. শাহ মনির আরও বলেন, ডিসেম্বর থেকে সংক্রমণ নিম্নমুখী ছিল। এরপর ফেব্রুয়ারি থেকে টিকাদান কার্যক্রম শুরুর পর মানুষের মধ্যে একটি সাহসী মনোভাব লক্ষ্য করা যায়। অধিকাংশ মানুষ মাস্ক ব্যবহার ছেড়ে দেন। বিয়েসহ সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ধুম পড়ে যায়। অর্থাৎ অধিকাংশ মানুষের মনোভাব ছিল, করোনাভাইরাস চলে গেছে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, মানুষের এমন বেপরোয়া চলাফেরার ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যেই সংক্রমণ আবারও বাড়তে থাকে।

তিনি বলেন, এখন এটি আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। গত দু'দিনের সংক্রমণ পরিস্থিতি গত বছরের জুন-জুলাই মাসকে পেছনে ফেলেছে। সংক্রমণ আরও বাড়বে। তবে পরিস্থিতি কী হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। সংক্রমণ পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, সে সম্পর্কে ধারণা পেতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

সবার আগে যে মানুষকে সচেতন হতে হবে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, গত এক বছর ধরে আমরা যে চর্চাগুলো করেছি, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যে শিষ্টাচারগুলো আমরা শিখেছি, গত দুই-তিন মাসে আমরা চরম আত্মতুষ্টিতে ভুগেছি। এ কারণেই সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি।আমরা এখনও যদি সতর্ক হই, তাহলে অবশ্যই আমরা একে মোকাবেলা করতে পারি।

ভোরের পাতা- এনই

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]