গণহত্যার অপরাধে পাকিস্তানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে: মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৫ মার্চ, ২০২১, ২:০৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালীন গণহত্যার অপরাধে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের নিকট রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ করেন তারা।
রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ শেষে পাকিস্তান দূতাবাস অভিমুখে মিছিল নিয়ে রওনা হলে শাহবাগে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয় পুলিশ। শাহবাগে বিক্ষোভ শেষে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বরাবর স্মারকলিপি দেয়ার জন্য পুলিশ সংগঠনের চার সদস্যের প্রতিনিধি দলকে পাকিস্তান দূতাবাসে নিয়ে যায়। পাকিস্তান দূতাবাসে স্মারকলিপি পৌঁছে দেয়ার জন্য স্মারকলিপি গ্রহণ করেন ডিপ্লোমেটিক জোনের এডিসি আবুল কাশেম মোঃ বাকী বিল্লাহ।
স্মারকলিপি প্রদানের প্রতিনিধি দলে উপস্থিন ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ মাহমুদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মাকসুদ হাওলাদার, শাহীন মাতবর সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
পাকিস্তান দূতাবাস অভিমুখে পদযাত্রার শুরুতে সমাবেশে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন বলেন, আজ ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস। বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে বড় বেদনাদায়ক দিন। ১৯৭১ সালের আজকের এইদিনে পাকিস্তানি হানাদার অপারেশন সার্চলাইটের নামে বাঙ্গালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ৩০ লক্ষ নিরপরাধ মানুষকে হত্যা ও ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি করেছিল। বারবার দাবি করা সত্ত্বেও একাত্তরের অপকর্মের জন্য পাকিস্তান আজও পর্যন্ত বাংলাদেশের নিকট রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চায়নি। পাকিস্তান ক্ষমা না চাওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে, পাকিস্তান গণহত্যাকে সমর্থন করে। জাতিসংঘের নিকট দাবি, ২৫ মার্চকে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। পাকিস্তান রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা না চাইলে গণহত্যার সাথে জড়িত পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালতে মামলা করার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
তিনি আরোও বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত হওয়ার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য পাকিস্তানি অপশক্তির দোসররা আবার মরিয়া হয়ে উঠেছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনকে বিতর্কিত করার জন্য পাকিস্তানের পেইড এজেন্ট বামাতি-জামাতি গংরা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি অপশক্তির নানাবিধ ষড়যন্ত্র এখনো চলমান। পাকিস্তান সরকারের নিকট দাবি, আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের আগেই বাংলাদেশের নিকট আনুষ্ঠানিক ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। পাকিস্তান দূতাবাসের কার্যক্রম সংকুচিত করতে হবে। অন্যথায় স্বাধীনতা বিরোধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির মদদদাতা পাকিস্তানকে একাত্তরের গণহত্যার অপরাধে পাকিস্তান দূতাবাস বন্ধ ও সকল প্রকার কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার দাবিতে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।