বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের অস্তিত্ব যত দিন অব্যাহত থাকবে আমাদের তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে হবে এবং তাঁর অবদানকে স্বীকৃতি দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু শুধু যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন তা নয়, তিনি শুধু যে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করে গিয়েছেন তা নয়, তিনি একটি আদর্শ রেখে গিয়েছেন যা বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশ ফলো করলে সেই দেশও উন্নত দেশে রূপান্তরিত হবে। তাই আমাদের উচিৎ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যথাযথভাবে মনে প্রাণে ধারণ করা।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ২৮৬তম পর্বে সোমবার (২২ মার্চ) আলোচক হিসাবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন জার্মান আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা, সভাপতি, বাংলাদেশ কালচারাল এসোসিয়েশন এবং লেখক মায়েদুল ইসলাম তালুকদার বাবুল, ঘানিম ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশন (ব্রুনাই হালাল ফুডস), ব্রুনাই এর সিইও, ব্রুনাই বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা, অস্ট্রেলিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাবেক সভাপতি এবং সাবেক ছাত্রনেতা ড. নূর রহমান, বেসিসের সভাপতি, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক সৈয়দ আলমাস কবির, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ফয়সাল আহসান উল্লাহ। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
ড. নূর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনে শুরু দিক থেকেই ক্যারিসমেটিক ছিলেন, আদর্শিক ছিলেন, প্রতিবাদী ছিলেন। তিনি ছোট বেলা থেকেই মানুষকে নিজের মতো করে ভালোবাসতেন এবং এই ভালোবাসাই তাকে একসময় শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধুতে পরিণীত করে তুলে। স্কুলে পড়া অবস্থায় বঙ্গবন্ধু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সহচর্য ছিলেন এবং তার কাছ থেকেই তার রাজনীতির হাতেখড়ি হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন
বাংলার মানুষের জীবনযাত্রার মান ও বাংলার মানুষকে তার সঠিক অধিকার দিতে হলে একটি মাত্র উপায় ছিল আর সেটি ছিল বাংলাদেশকে স্বাধীন করা। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে শুরু হয়ে, ১৯৬২ সালের গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ১৯৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলন পথ পরিক্রমা শেষে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। বঙ্গবন্ধু প্রতিটি আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি তাঁর যোগ্য ও প্ররোচিত নেতৃত্বের মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধকে পরিচালিত করেছিলেন। তিনি একজন সত্যিকারের দূরদর্শী রাজনীতিবিদ ছিলেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সেই ঐতিহাসিক কালজয়ী ভাষণে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম...জয় বাংলা’—উদ্দীপ্ত বক্তব্য পুরো বাঙালি জাতিকে এক অবিস্মরণীয় শক্তিতে উদ্দীপ্ত করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে সাহসী করে তোলে। সেই ঐতিহাসিক ভাষণ তরঙ্গায়িত হয়ে পৌঁছে যায় দেশের সীমানা ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বে। সেই স্বাধীনতার স্বপ্ন ও ভিশন তিনি দেখেছিলেন এবং মানুষকে একত্রে করে তিনি সবাইকে এটা দেখিয়েছিলেন এবং এটা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শুধু যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন তা নয়, তিনি শুধু যে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করে গিয়েছেন তা নয়, তিনি একটি আদর্শ রেখে গিয়েছেন যা বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশ ফলো করলে সেই দেশও উন্নত দেশে রূপান্তরিত হবে।