শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিরোনাম: মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির    মৎস খাতে বাংলাদেশকে ১৭২ কোটি টাকার অনুদান দিচ্ছে জাপান     আইসিসির এলিট প্যানেলে যুক্ত হলেন আম্পায়ার সৈকত    জেনে নিন আগামী পাঁচ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস    শুক্রবার নাগাদ আসতে পারে ভারতের পেঁয়াজ    বিএনপি স্বাধীনতার মর্মার্থকে অকার্যকর করতে চায়: কাদের    বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়াই যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
দুদকে অভিযোগ
শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গণপূর্তের প্রকৌশলী কালামের
আরিফুর রহমান
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম আপডেট: ১৮.০২.২০২১ ১:২১ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ

শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গণপূর্তের প্রকৌশলী কালামের

শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গণপূর্তের প্রকৌশলী কালামের

গণপূর্তের ইএম-৩ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল কালামের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। অভিযোগটি বর্তমানে যাচাই-বাছাই সেলে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সাইফুল ইসলাম খান নামের তার এক শ্যালককে দিয়ে একটি ঠিকাদারি ফার্ম খুলেছেন প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম। ওই ফার্মটির নাম- ‘ইন্টিগ্রেটেড কনস্ট্রাকশন সার্ভিসেস’। স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়ে তিনি ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নানাভাবে কাজ পাইয়ে দিতে নিজের ক্ষমতাকে ব্যবহার করেছেন। এ ঠিকাদারি ফার্মের অনুকুলে সিসিটিভি, নেটওয়ার্কিং, সাউন্ড সিসটেমস ও পিএবিএক্স’র কাজ দিতে অন্যান্য সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলীদের প্রতিনিয়ত চাপ দেন। যদি কোন নির্বাহী প্রকৌশলী তার কথা না শুনেন তাদেরকে হয়রানিমূলকভাবে বদলী করেন। অনেক নির্বাহী প্রকৌশলী তার ঠিকাদারি ফার্মে কাজ না দিলে চাকরি খেয়ে ফেলারও হুমকি দেন।

সূত্রে জানা গেছে, তিনি পিপিআর’র শর্তাবলী ভঙ্গ করে নিজ শ্যালকের নামীয় ঠিকাদারী ফার্মের নামে কাজ দিয়ে টেন্ডার অনুমোদন করেছেন এবং বেশ কিছু টেন্ডারে মূল্যায়নে পর্যালোচক হিসাবে কাজ করেছেন। তিনি তার অধীনস্থ কাঠের কারখানা বিভাগে ৮ কোটি, মেকানিক্যাল কারখানা বিভাগে ৪ কোটি, ইএম বিভাগ ৭-এ ১২ কোটি, ইএম বিভাগ ৮-এ ৬ কোটি; মোট ৩০ কোটি টাকার অধিক কাজ প্রদান করেছেন। তার শ্যালককে কাজ না দেওয়ায় নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ মো. আব্দুল্লাহ আল মনসুরকে  ইএম ৮ বিভাগ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন।

সূত্র জানায়, তিনি ঘুষ পেলে নিজেই এস্টিমেট তৈরি করেন। রাজস্ব বাজেটে ১২ লাখ টাকার প্রাক্কলন পাশ করার বিধান থাকলেও আবুল কালাম ১২ লাখ টাকার উর্ধ্বের ২ কোটি টাকার প্রাক্কলন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে না পাঠিয়ে নিজেই পাশ করে দেন। এভাবে দুর্নীতি করে সেই টাকায় প্রকৌশলী আবুল কালাম রাজধানীর রামপুরা বনশ্রীর ব্লক নং- ৫ জি, রোড নং-৫, বাড়ি নং ০১ হোল্ডিং-এ বহুতল বাড়ি নির্মাণ করেছেন। যার বর্তমান মূল্য কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রকৌশলী আবুল কালামের শ্যালক সাইফুলও দুলাভাইয়ের বদৌলতে ঠিকাদারী কাজ করে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন গত কয়েক বছরে। গুলশানের নিকেতনে রয়েছে তার ৩ হাজার বর্গ ফুটের ২টি ফ্ল্যাট, আফতাব নগরে রয়েছে ৫ কাঠার ৫ টি প্লট। বনশ্রীতে রয়েছে ৫ হাজার বর্গ ফুটের আলিশন ফ্ল্যাট। নিজের রয়েছে এলিয়ন ব্রান্ডের নতুন গাড়ী। কুমিল্লার নবী নগরে আছে ৪৫ একর জমি। ঢাকার কয়েকটি ব্যাংকে রয়েছে প্রচুর টাকা। এছাড়াও শ্যালক সাইফুলের ব্রান্ড নিউ লেক্সাস গাড়ি, বাড্ডাতে ৬ তলা বাড়ি, বসুন্ধরা ডি ব্লকে ৩টি ৫ কাঠার প্লট রয়েছে; যার বর্তমান মূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা। এসব তথ্য উল্লেখ করে গত ৭ জানুয়ারি দুদকের চেয়ারম্যান বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন গণপূর্ত বিভাগের একজন সচেতন ঠিকাদার। অভিযোগের সাথে তিনি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল কালামের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্রও জমা দিয়েছেনে। এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠিকাদার সমিতির এক নেতা ভোরের পাতাকে বলেন, ‘তিনি অনেক ক্ষমতাশালী লোক, এতটুকুই বলতে পারবো। তিনি যখন যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন এই অধিদফতরে।’



নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিবার্হী প্রকৌশলী বলেন, ‘গত কিছুদিন আগে আমার দফতরে একটি চিঠি পাই। সেখানে কিছু নতুন সরঞ্জাম কেনার দরপত্র থাকে। যিনি চিঠিটি নিয়ে আমার কাছে এসেছেন তাকে আমি বলি, ভাই আমার এইখানে কোন কিছুর সমস্যা নেই, হলে আপনাকে জানাবো। তিনি তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী স্যারের শ্যালক। আমাকে জানান আমি আসার দরকার আসছি। বাকিটা আপনার স্যারের সঙ্গে কথা বলে নিয়েন। জেনে নিয়েন এই প্রতিষ্ঠানটি কার।’ এই বিষয়ে মো. সাইফুল ইসলাম খানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এই রকম কোন ঠিকাদারি ব্যবসা করি না। আমার সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল কালামের কোন সম্পর্ক নেই। আমি তার শ্যালকও নই।’

এই অভিযোগের বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল কালামের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাকে তার দফতরে পাওয়া যায়নি। খুদেবার্তা পাঠালে তিনি কয়েক ঘন্টা পর মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি এখন গ্রামের বাড়িতে আছি। আপনার সঙ্গে পরে কথা হবে।’ যদিও পরে তিনি আর কথা বলেননি। এই বিষয়ে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার ভোরের পাতাকে বলেন, ‘আমি মাত্র কয়েকমাস হলো জয়েন করেছি। আপনার কাছ থেকে বিষয়টি শুনলাম। আমরা এই বিষয়ে তদন্ত করবো।’ এই বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন ‘দুদক’র উপপরিচালক জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য ভোরের পাতাকে বলেন, ‘গণপূর্তের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল কালামের একটি লিখিত অভিযোগ আমাদের দফতরে এসেছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে। শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছেনা।’

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]