কিশোরীকে ধর্ষণের পাশাপাশি তাকে ও তার মাকে মাথা ন্যাড়া করে দেয়ার মামলায় বগুড়ার তুফান সরকারকে জামিন দিয়েছে আদালত।
রোববার (১৭ জানুয়ারি) শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফজলুল হক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিপি নরেশ মুখার্জি।
তিনি বলেন, কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় রোববার আদালতে তুফানের জামিন চাওয়া হয়। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করে। তবে আমরা এ জামিনের বিরোধিতা করেছি।
২০১৭ সালের ২৮ জুলাই তুফান সরকারসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে বগুড়া সদর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী কিশোরীর মা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভালো কলেজে ভর্তি করার কথা বলে ওই কিশোরীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন তুফান। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই নিজ বাড়িতে নিয়ে তুফান তাকে ধর্ষণ করেন। কিন্তু বিষয়টি জানতে পারেন তুফানের স্ত্রী। এরই জেরে একই বছরের ২৮ জুলাই ভুক্তভোগী কিশোরী ও তার মাকে শারীরিক নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করে দেন তুফান।
এ ঘটনায় ২৮ জুলাই বগুড়া সদর থানায় দুটি মামলা করেন ভুক্তভোগী কিশোরীর মা। দুই মামলাতেই তুফানকে প্রধান আসামি করা হয়।
আদালত সূত্র জানায়, একটি মামলার তদন্ত শেষে তুফানসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। অন্য আসামিরা হলেন- তুফানের স্ত্রী তাছমিন রহমান ওরফে আশা, আশার বড় বোন নারী কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকি, আশার মা লাভলী রহমান ওরফে রুমি, তুফানের সহযোগী মো. আতিকুর রহমান ওরফে আতিক, মুন্না, আলী আযম দীপু, মেহেদী হাসান ওরফে রুপম, সামিউল হক ওরফে শিমুল ও এমারত আলম খান ওরফে জিতু।
অন্যদিকে, ছাত্রী ও তার মাকে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করে দেয়ার ঘটনায় তুফানসহ ১৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে তুফানসহ ১০ জন রয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায়। বাকি তিনজন হলেন- তুফানের শ্বশুর জামিলুর রহমান, নাপিত জীবন রবিদাস ও বাদুড়তলা এলাকার আনজুয়ারা বেগম।
এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলেও প্রাথমিক তদন্তে সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় তুফানের শ্বশুর জামিলুর ও নাপিত যতিনকে।
অভিযোগপত্রে তুফানের সহযোগী মুন্না, আতিকুর রহমান ও জীবন রবিদাস আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, তদন্তে সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়াও আদালতে দেয়া ভুক্তভোগী কিশোরীর ২২ ধারায় জবানবন্দি, জব্দ করা আলামত, চিকিৎসকের দেয়া সনদ, আসামিদের স্বীকারোক্তি এবং ঘটনার বাস্তবতা ও পারিপার্শ্বিকতা আমলে নিয়ে এ অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে।